রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কাছে রাজ্যের পেশ করা মোট ২২টি বিল আটকে রয়েছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে বিল আটকে রাখা নিয়ে এবার রাজ্যপালের সমালোচনা করলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের। একদিন আগেই সুপ্রিম কোর্ট একটি মামলায় পর্যবেক্ষণে বিচারপতিরা জানান, আপনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নন। রাজ্যপালদের এই সত্যটা ভুলে যাওয়া উচিত নয়। সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণের পরই সরাসরি আক্রমণ করলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও অন্য রাজ্যের একটি মামলায় এমন পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের।
এদিকে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রর বেঞ্চ একাধিক রাজ্যে সংশ্লিষ্ট রাজ্যপালের বিল আটকে রাখা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল, সংশ্লিষ্ট রাজ্যের রাজ্যপালের কাছে বিধানসভা থেকে বিল এলে সেটি দ্রুত কার্যকর করা উচিত। সুপ্রিম কোর্ট মধ্যস্থতা করলে তবেই কাজ শুরু হবে এটা ঠিক নয়। বিজেপি বিরোধী রাজ্য গুলিতে এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ আগেই তুলেছিলেন বিরোধীরা। আর তারপরেই এবার বাংলার রাজ্যপালের বিরুদ্ধেও সুর চড়ালেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
অন্যদিকে বাংলায় এই বিল আটকে রাখা নিয়ে রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাত চরমে পৌঁছেছে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে আক্রমণ করতে শুরু করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু থেকে কুণাল ঘোষ। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত বিল–সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিল আটকে রয়েছে রাজ্যপালের কাছে। এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্যপালের বিরোধিতা করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেন রাজ্যপাল। সেক্ষেত্রেও সুপ্রিম কোর্টের গুঁতো খেয়েছিলেন। এবার সুপ্রিম কোর্ট ভিন রাজ্যের প্রেক্ষিতে এমন পর্যবেক্ষণ করতেই আশার আলো দেখছেন বিধানসভার স্পিকার।
আরও পড়ুন: রাজ্যপালকে বিক্ষোভ দেখাল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্যের আশ্বাস
ঠিক কী বলেছেন স্পিকার? রাজ্যপাল যে অস্থায়ী উপাচার্যদের নিয়োগ করেছিলেন তাঁদের অনুপ্রবেশকারী বলে কটাক্ষ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। যেহেতু সুপ্রিম কোর্ট এমন নিয়োগকে বেআইনি বলেছে। রাজ্য–রাজ্যপাল সংঘাতে সম্পর্কের মাঝেই আটকে থাকা বিল সংক্রান্ত বিষয়ে স্পিকারের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এটা ঠিক নয়। জনগণের জন্য বিল পেশ হয়। তার মর্যাদা রাজ্যপালের দেওয়া উচিত। বিল আটকে রাখার অধিকার তাঁর নেই। কোনও সুপারিশ থাকলে সেই সুপারিশ–সহ বিল ফেরত পাঠাতে পারেন।’