গত ১৪ জুলাই পৃথিবী থেকে চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছে চন্দ্রযান ৩। ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে চাঁদে পৌঁছতে এই চন্দ্রযানের ৪০ দিন সময় লাগবে। ২৩ অথবা ২৪ অগাস্ট চাঁদের মাটিতে অবতরণ করবে চন্দ্রযান ৩। চাঁদের মাটিতে পা রাখার পরেই রোভার বা রোবট গাড়ি তথ্য সংগ্রহ করা শুরু করবে। সেই রোভারের গতিবিধির সমন্বয় এবং নিয়ন্ত্রণ করবেন ইঞ্জিনিয়ারদের একটি দল। সেই দলে রয়েছেন বাঁকুড়ার ডান্না গ্রামের বাসিন্দা কৃশানু নন্দী। কৃষক পরিবারের এই সন্তানকে নিয়ে আজ শুধু তাঁর পরিবার নয়, স্বাভাবিকভাবেই গর্বিত বাঁকুড়াবাসী।
আরও পড়ুন: চন্দ্রযানের নেপথ্যে আরও এক বাঙালি, সামিল মছলন্দপুরের নীলাদ্রি
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোট থেকেই মহাকাশ বিজ্ঞানের দিকে ঝোঁক ছিল কৃশানুর। পড়াশোনায় তিনি বরাবরই ভালো ছিলেন। কৃষক পরিবারের এই ছেলে ছোট থেকেই ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। তাঁর সেই স্বপ্ন সত্যি হল। আজ কৃশানুর নাম জায়গা পেল ইসরোর ইতিহাসে। বর্তমানে ইসরোয় কর্মরত বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের থানার ডান্না গ্রামের কৃশানুর। ইসরোর ঐতিহাসিক চন্দ্রযান ৩ অভিযানে জায়গা পেয়েছেন কৃষক পরিবারের এই সন্তান। এর আগে চন্দ্রযান ২ প্রজেক্টে ছিলেন না কৃশানু। তবে চন্দ্রযান ৩ প্রজেক্টে যুক্তদের দলে জায়গা পাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই খুশি কৃশানু। এখন চন্দ্রযান ৩ চাঁদের মাটি ছোঁয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি। আর তারপরেই তাঁর কাজ শুরু হবে।
বছর ত্রিশের এই ইঞ্জিনিয়ারের বাবা তারাপদ নন্দী জানান, ‘কৃশানু বরাবরই পড়াশোনায় ভালো ছিলেন। ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন ছিল ওঁর। পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছিল ইসরোয়। চন্দ্রযান ৩ অভিযানে যুক্তদের মধ্যে কৃশানুও রয়েছেন। গোটা দেশবাসীর মতো আমরাও চাইছি চন্দ্রযান ৩ অভিযান সফল হোক।’ উল্লেখ্য, উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন কৃশানু। তারপরে তিনি বিটেক করেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমটেক করেছিলেন কৃশানু। বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিয়েছিলেন কৃশানু। শেষে ইসরোয় পরীক্ষা দিয়ে তিনি চাকরি পান।
কৃশানুর দিদি দেবিকা নায়েক হলেন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। তিনি জানান, ছোট থেকেই কৃশানুর স্বপ্ন ছিল মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় চাকরি করা। তাঁর সেই স্বপ্ন সফল হয়েছে। আমার ভাই চন্দ্রযান ৩ অভিযানের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এতে আমি ভীষণ খুশি হয়েছি। আমরা সকলেই খুব গর্বিত। আমরা সাফল্য কামনা করছি।’ বর্তমানে নিজের কর্মক্ষেত্র বেঙ্গালুরুতে রয়েছেন কৃশানু। তিনি জানান, ‘রোভারের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা এখন বড় কাজ। সেই কাজের সঙ্গে আমি যুক্ত রয়েছি। দেশের কাজে অংশ নিতে পারে আমি গর্ব বোধ করছি।’