শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডল। একই সঙ্গে তৃণমূলে ফেরার জল্পনাও মঙ্গলবার উসকে দিলেন তিনি।
ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক। ২০১১ সালে তাঁদের টিকিটেই তৎকালীন অবিভক্ত বর্ধমান জেলার গলসি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে রাজ্য বিধানসভায় যাওয়ার ছাড়পত্র পেয়েছিলেন তিনি। তবে জার্সি বদলাতে বেশি দেরী করেননি। ২০১৪ সালে যোগ দেন তৃণমূলে। উপহারটাও পেয়েছিলেন হাতেনাতে। লোকসভার টিকিট। ২০১৪ সালে তৃণমূলের টিকিটেই বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে ছাড়পত্র পেয়েছিলেন দেশের সংসদে যাওয়ার। গিয়েওছিলেন। আসলে বুঝেছিলেন বামেদের দিন শেষ হয়ে গিয়েছে। সেখানে পড়ে থাকলে কপালে আর বিশেষ কিছু জুটবে না। তাই ঘরে বসে আঙুল না চুষে চলে এসেছিলেন তৃণমূলে। সেই হিসাব তাঁর মিলেছিল। কিন্তু একুশের হিসাব তিনি আর মেলাতে পারছেন না। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়ে কার্যত এখন মাথার চুল ছেঁড়ার উপক্রম হয়েছে তাঁর। এবার ফের তৃণমূলে ফেরার ইঙ্গিত দিতেই পাল্টা আক্রমণের মুখে পড়লেন তিনি। আর সেই আক্রমণ ধেয়ে এল তৃণমূলের দিক থেকেই। তিনি সুনীল মণ্ডল। এদিনই তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূল তাঁকে দলে ফেরার প্রস্তাব দিলে তাঁর কোনও আপত্তি নেই। আর সেই প্রশ্নেই তাঁকে বিঁধেছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
সুনীল বলেন, “বিজেপি আমাদের বিশ্বাস করতে পারেনি। তৃণমূল থেকে যাঁরা বিজেপিতে এসেছেন, তাঁদের সহ্য করতে পারছে না। বিজেপি হয়তো মনে করছে এঁদের বিশ্বাস করা ঠিক হবে না। কিন্তু দিল্লি থেকে উড়ে এসে ভোটে জেতা যায় না। পঞ্চায়েত স্তরে, বুথ স্তরে বিজেপি-র দুর্বলতা ছিল। শুধু মিটিং মিছিল, জনসভা করলে হয় না, মানুষের কাছে পৌঁছতে হয়”।
সুনীল বলেন, “শুভেন্দু প্রথম আমার বাড়ি আসে। যে কথা আমায় যে যে কথা দিয়েছিল, একটা কথা মানেনি। দাদা ভাই হয়ে এক সঙ্গে কাজ করব বলেছিল। কিন্তু কথা রাখেনি”। শুভেন্দু তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছে কি না, এমন প্রশ্নে তাঁর উত্তর, “শুধু আমার আমার সঙ্গে নয়, অনেকের সঙ্গেই করেছে”। এরপর বলেন, “শুভেন্দুকে নিয়ে আমি আর একটাও কথা বলতে চাই না। শুভেন্দু কারও ফোনই ধরে না। আমার সঙ্গে এখন সম্পর্ক নেই”।
কিন্তু সুনীলের এই তৃণমূলে ফেরার কথা নিয়ে তীব্র আপত্তি তুলেছেন তৃণমূল সাসংদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘তৃণমূল ওঁকে প্রস্তাব দিতে যাবে কেন? উনি কে? ওঁর কোনও স্ট্যান্ডার্ডই নেই। নিজের ধান্দায় বিজেপিতে গিয়েছিলেন। ওঁর লোকসভা কেন্দ্রে তো বিজেপি হেরে ভূত হয়েছে! চুরি-ডাকাতি করা লোক। ইঁদুরের গর্তে ঢুকে রয়েছে। নিজের সুবিধার জন্য আসতে চাইছেন।’ কল্যাণের এই মন্তব্য থেকেই পরিষ্কার সুনীল ফিরতে চাইলেও তাঁর তৃণমূলে ফেরার পথে খুব সহজ হবে না।