প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আংশিকভাবে খারিজ হয়ে গিয়েছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়। তারপরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে খোঁচা দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের তথ্যপ্রযুক্তি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্য। ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় দেশের ফার্স্ট বয়.. উচ্চ আদালতে রায় খারিজ হওয়ার নিরিখে।’ সেইসঙ্গে তৃণমূলের তথ্যপ্রযুক্তি সেলের প্রধান অভিযোগ করেন, ‘ওই চেয়ারে (বিচারপতির চেয়ারে) বসে থাকা একজন ব্যক্তির উদ্দেশ্য কখনওই ন্যায়বিচার ছিল না। ছিল তৃণমূলকে কাঁপানো!’
আরও পড়ুন: প্যারা-টিচার নিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের খারিজ ডিভিশন বেঞ্চে, কী বলা হল?
বুধবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায় আংশিকভাবে খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। গত বছরের নভেম্বরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন যে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের নয়া প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক স্কুলের পার্শ্বশিক্ষকরা। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের হয়েছিল।
আরও পড়ুন: শিক্ষকদের বেতন মিলছে না! স্কুল চালাতে না পারলে আদানিকে বেচে দিন, বিস্ফোরক বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়
সেই মামলার প্রেক্ষিতে বুধবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ আংশিকভাবে খারিজ করে দিয়েছে বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় উচ্চপ্রাথমিক স্কুলের পার্শ্বশিক্ষকরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। শুধুমাত্র প্রাথমিক স্কুলের পার্শ্বশিক্ষকরা ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন বলে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সেন এবং বিচারপতি কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ।
তারপর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করেন তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাংশু। তিনি বলেন, ‘অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় দেশের ফার্স্ট বয়.. উচ্চ আদালতে রায় খারিজ হওয়ার নিরিখে। অভিনন্দন।’ সেই পোস্টের প্রেক্ষিতে এক নেটিজেন আবার বলেন, ‘তৃণমূলকে কাঁপিয়ে দেওয়ার নিরিখে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (হলেন) দেশের ফার্স্ট বয়।’
ওই কমেন্টের প্রেক্ষিতে দেবাংশু বলেন, ‘কারেক্ট বলেছেন! ওই চেয়ারে বসে থাকা একজন ব্যক্তির উদ্দেশ্য কখনওই ন্যায়বিচার ছিল না। ছিল তৃণমূলকে কাঁপানো! ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে.. আরও একটি কথাও ভাবুন! রাজ্যের বিরোধী দলগুলি কত বড় বড় অকর্মের ঢেঁকি হলে নিজেদের চাইতে বেশি ভরসা কোনও কাঁপিয়ে দেওয়া লোকের উপর রাখে!’
উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় একাধিক নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে রাজ্য সরকার এবং তৃণমূল অস্বস্তিতে পড়েছে। পরবর্তীতে কোনও নির্দেশ উচ্চ আদালতে খারিজ হয়েছে, কোনও নির্দেশ উচ্চ আদালতে বহাল রাখা হয়েছে। তারইমধ্যে একাধিকবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে খোঁচা দিয়েছেন তৃণমূল নেতারা।