Formalin in Fish: কথায় বলে মাছেভাতে বাঙালি। মাছ ছাড়া বাঙালি দিন চলে না। মাছ স্বাস্থ্যের পক্ষেও খুব ভালো। কিন্তু জানেন কি মাছের নামে আপনি নিয়মিত বিষ খাচ্ছেন? হ্যাঁ, শুনে আঁতকে ওঠার মতোই ব্যাপার। মাছের পচন ঠেকাতে তাতে ফরমালিন মেশান বিক্রেতারা। সেই ফরমালিন যুক্ত মাছ নিয়মিত খেলে শরীরে বিভিন্ন মারণ রোগ বাসা বাঁধে। তাই বাজারে গিয়ে ফরমালিন দেওয়া নেই এমন মাছই কিনুন। আপনি ভাবছেন সেই মাছ চিনবো কি করে? কি করে মাছ থেকে ফরমালিন দূর করবেন তা জানেন কি? চলুন সেসব বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক এই প্রতিবেদনে।
এখন দূষণ সবেতেই। শাক সবজি দ্রুত বাড়াতে জমিতে দেওয়া হচ্ছে রাসায়নিক। ব্যাপক মাত্রায় ব্যবহার করা হচ্ছে কীটনাশক সেসব ঢুকছে আমাদের শরীরে। তেমনই মাছ বাজারে দিন দিন ফরমালিনের ব্যাবহার ভয়াবহ ভাবে বেড়ে চলছে। বাজারের বেশিরভাগ মাছেই বিষাক্ত ফরমালিন মেশানো হচ্ছে। অনেক মাছ আসে অন্ধ্রপ্রদেশ সহ বাইরের রাজ্য থেকে। এ রাজ্যেও বসিরহাট সহ বিভিন্ন এলাকায় বানিজ্যিকভাবে প্রচুর মাছের চাষ হয়। সেসব মাছ একদিনে বিক্রি হয় না। মাছ মারা যাওয়ার পর দ্রূত পচতে শুরু করে। পচন ঠেকাতে তাই আলাদা ব্যবস্হা করতে হয়। আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন, মাছ বেশি সময় ভালো রাখতে আগে বরফ ব্যবহার করা হত। বরফ আনা, ভেঙে টুকরো করার অনেক ঝামেলা। ফরমালিনের মাধ্যমে অল্প খরচে দীর্ঘ সময়ের জন্য মাছ সংরক্ষণ করা যায়। ফলে এখন এর অধিক মাত্রায় ব্যবহার হচ্ছে।
ফর্মালিন হল এক ধরণের পলিমার। দেখতে সাদা পাউডারের মত। তা জলে সহজেই মিশে যায়। তবে আমাদের শরীরে এই ফরমালিনের প্রভাব সাংঘাতিক।ফরমালিন আমাদের কিডনি ও লিভারকে অকেজো করে দেয়। বিশেষ করে শিশুদের বুদ্ধিমত্তা দিন দিন কমিয়ে দেয়। পাকস্থলী, ফুসফুস ও শ্বাসনালীতে ক্যান্সার সৃষ্টি করে। এতে গর্ভবতী মায়েদের সন্তান প্রসবে জটিলতা দেখা দেয়। জন্মগতত্রুটি নিয়ে শিশু জন্মগ্রহণ করতে পারে। মাছে ফরমালিনের মাত্রা বেশী থাকলে তা খাবার পর মানুষের শরীর অবশ হয়ে যেতে পারে। এতে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হয়। দৈহিক স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
বুঝতেই পারছেন, এই ফরমালিন কতটা ক্ষতিকর। তাই বাজারে গিয়ে ফরমালিন নেই এমন টাটকা মাছই কিনুন।ফরমালিন ছাড়া মাছের ফুলকা হয় উজ্জ্বল লাল রঙের। আঁশও উজ্জ্বল থাকে। শরীরে আঁশটে গন্ধ পাওয়া যায়।চোখ উজ্জ্বল হয়। ত্বক পিচ্ছিল থাকে। সেখানে ফরমালিন যুক্ত মাছের ফুলকা ধূসর হয়। চোখ ঘোলাটে হয়। তাতে ফরমালিনের গন্ধও পাওয়া যায়। দেখবেন এই মাছে মাছি বসে না। অনেক সময় বাধ্য হয়ে ফরমালিন যুক্ত মাছই কিনতে হয় আমাদের। সেক্ষেত্রে রান্নার আগে কাঁচা মাছ ১ ঘণ্টা নুন জলে ভিজিয়ে রাখুন।
এতে ফরমালিনের পরিমাণ ৯০ শতাংশ কমে যাবে। প্রথমে চাল ধোয়া জলে ও পরে সাধারণ জল দিয়ে মাছ ধুলেও ফরমালিনের পরিমাণ অনেকটা কমে যায়। মাছ রান্না করার আগে জলে ৫ চামচ ভিনিগার মিশিয়ে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এতে মাছ পুরোপুরি ফরমালিন মুক্ত হবে।উপায় তো জানা হয়েই গেল। তাহলে এবার মাছ খান নির্ভয়ে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়