দিল্লিতে মোদী – মমতা সাক্ষাৎ শেষ হতে না হতেই নবান্নে হানা দিলেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ হঠাৎ নবান্নে পৌঁছে যান তিনি। সঙ্গে ছিলেন শংকর ঘোষ, চন্দনা বাউড়িসহ ৪ বিধায়ক। শুভেন্দু যে নবান্নে যাচ্ছেন তার কোনও খবরই ছিল পুলিশের কাছে। প্রায় ২০ মিনিট পর নবান্ন থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। সাংবাদিকদের বলেন, রাজ্যের মানুষের দাবি মুখ্যসচিবকে জানিয়ে এলাম।
মুখ্যমন্ত্রী দিল্লিতে থাকায় এদিন নবান্নের নিরাপত্তা অতটা আঁটোসাঁটো ছিল না। তারই মধ্যে কাউকে কিছু না জানিয়ে নবান্নে পৌঁছে যান শুভেন্দু। নবান্নের ভিতরে ঢুকতেই পুলিশের টনক নড়ে। চারি দিক থেকে নবান্নে হাজির হতে থাকেন পুলিশকর্মীরা। নবান্নের মূল গেট ছেয়ে যায় পুলিশকর্মীতে।
নবান্নের ভিতরে শুভেন্দুবাবুসহ বিজেপি বিধায়করা কী করছেন, এই নিয়ে যখন বাইরে জল্পনা চরমে তখনই বেরিয়ে আসেন তাঁরা। এর পর শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী সাংসদদের নিয়ে দিল্লি গেছেন রাজ্যের বঞ্চনার কথা বলতে। পশ্চিমবঙ্গের জনগণকে বঞ্চনা করছে এই সরকার এটা বলতে এসেছিলাম। বিরোধী দলের বিধায়ক, সাংসদদের প্রশাসনিক সভায় ডাকা হয় না। আমাদের সমর্থক বা ভোটার হলে শৌচালয়, আবাস যোজনা থেকে বঞ্চিত করা হয়। বাংলার জনগণকে বঞ্চনা করে, কেন্দ্রীয় অর্থ নয়ছয় করে, পশ্চিমবঙ্গে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করে যেটা দিল্লিতে ড্রামা করতে গেছেন, আমরা পালটা যুক্তি – তথ্য দিয়ে এখানে বলে গেলাম।’
তিনি বলেন, ‘মুখ্যসচিবের সঙ্গে দেখা হয়েছে। আগে থেকে বললে ঢুকতে দিত না। এখানে ১৪৪ ধারা থাকে। তাই আমিসহ ৪ বিধায়ক এসেছি। দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আর্থিক বঞ্চনার কথা বলছেন। এখানে জনগণকে বঞ্চনা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানে পশ্চিমবঙ্গে বিরোধী দলকে ভোট দিলে ঘরছাড়া হয়। পঞ্চায়েত ভোট লুঠ হয়। আবাস শৌচালয় নলবাহিত জল, বার্ধক্যভাতা দেব। একজন সাংসদ বলেন আমি ৭০ হাজার বার্ধক্যভাতা দেব’।
শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘এই সরকার ফর দ্য পার্টি, বাই দ্য পার্টি, অফ দ্য পার্টি। ফর দ্য ফ্যামিলি, বাই দ্য ফ্যামিলি, অফ দ্য ফ্যামিলি চলছে। কোরাপটেড গভর্নমেন্ট। এই সরকারকে কেন্দ্রীয় সরকার কত টাকা দিয়েছে। টাকা কী ভাবে নষ্ট হয়েছে তার তালিকা এখানে আমরা দিয়েছি। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী যে সরকারি অনুষ্ঠান করেছেন সেখানে বিজেপি সাংসদ, বিধায়কদের ডাকেননি। এই ভাবে রাজ্যে বিরোধীদের বঞ্চনা। জনগণের বঞ্চনা। নবান্নে এসে বলে গেলাম। লড়াই হবে, এক ইঞ্চিও জায়গা আপনাকে ছাড়ব না। আপনাকে তাড়া করে বেড়াব আমরা’।