আগরতলা : কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে সোমবার আগরতলার রবীন্দ্রকাননে ত্রিপুরার তথ্য ও সাংস্কৃতি দফতরের উদ্যোগে আয়োজিত হয় প্রভাতী কবি প্রণাম অনুষ্ঠান৷ মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা বলেন ‘‘এই অনুষ্ঠানে এসে মনে পড়ে যাচ্ছে ৭০ দশকের কথা। এরকমই একদিনে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের আম্রকুঞ্জে পাঠ করেছিলাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ইংরেজি কবিতা । আজ আবারও পাঠ করতে ইচ্ছে করছে।’’ তিনি এদিন পাঠ করেন “চিত্ত যেথা ভয় শূন্য”-র ইংরেজি অনুবাদ। মুহূর্তেই করতালিতে মুখরিত হয় চারদিক।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য, দর্শন, চিন্তাভাবনায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে। যখনই কোনও সংকট দেখা দেয় তখন তাঁর চিন্তা চেতনার ভাবধারা আমাদের সেই সংকট থেকে উত্তরণের পথ দেখিয়েছে। তাঁর সৃষ্ট ছোট গল্প, নাটক, কবিতা, সঙ্গীত, প্রবন্ধ সবক্ষেত্রেই আমাদের চলার পথে মার্গদর্শন দেখিয়েছে। রাজন্য আমল থেকে ত্রিপুরার সঙ্গে গভীর সম্পর্ক ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। মহারাজা বীরচন্দ্র মাণিক্য থেকে শুরু করে মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মাণিক্য পর্যন্ত চারজন মহারাজার সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল তাঁর।’’ তিনি আরও বলেন মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মাণিক্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ‘ভারত ভাস্কর’ উপাধিতে ভূষিত করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘ত্রিপুরার রাজন্য স্মৃতি বিজড়িত অন্যতম পর্যটন ক্ষেত্র উদয়পুরের ভুবনেশ্বরী মন্দির রবি ঠাকুরের সাহিত্যে স্থান করে নিয়েছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। কবিগুরুর সৃষ্ট রাজর্ষি, বিসর্জন, মুকুট থেকে ত্রিপুরার রাজাদের সম্পর্কে এবং ত্রিপুরা সম্পর্কে অবগত হতে পারছেন সকলে ।’’
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘আমাদের সংস্কৃতির অন্যতম প্রাণপুরুষ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। চিন্তা-চেতনা, সংস্কৃতি-সহ সবকিছুতেই জড়িয়ে আছেন তিনি। গীতাঞ্জলি কাব্যের ইংরেজি অনুবাদের জন্য প্রথম ভারতীয় হিসেবে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এক জীবনে এত সৃষ্টি তিনি করেছেন, যা ভাবা যায় না। প্রকৃত অর্থে তিনি একজন কিংবদন্তি। যথার্থ অর্থে ভারতবর্ষের কৃষ্টি সংস্কৃতির ধারক বাহক তিনি।’’ রবীন্দ্রনাথ রচিত দুটি গান ভারত বাংলাদেশ দুই রাষ্ট্রে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে শ্রদ্ধার সঙ্গে গাওয়া হয়, যা ইতিহাসে বিরল বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সাংস্কৃতি দপ্তরের সচিব পি কে চক্রবর্তী। বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব জে কে সিনহা। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংস্থার ছোট ছোট শিল্পীরা আবৃত্তি, গান এবং নৃত্য পরিবেশন করে এদিনের অনুষ্ঠানে।