সাধারণত সরকারি হাসপাতালে পেসমেকার, স্টেন্ট বা স্ক্রু স্টেনলেস স্টিলের হয়ে থাকে। কিন্তু, সেই যুগ এখন শেষ হয়ে গিয়েছে। এবার সরকারি হাসপাতালে টাইটেনিয়ামের পেসমেকার, স্টেন্ট অথবা স্ক্রু ব্যবহার করতে হবে। সেই মর্মে আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। এবার এনিয়ে দফতরের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। কয়েকদিন আগেই এ নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনের মেডিক্যাল স্টোরকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, মানব শরীরে টাইটেনিয়াম বেশি উপযোগী। তবে এই ধাতু অত্যন্ত দামি । উল্লেখ্য, এখনও পর্যন্ত দেশের অন্যান্য সরকারি হাসপাতালগুলিতে স্টেনলেসের স্টিল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফলে সে ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গই দেশের মধ্যে প্রথম রাজ্য হতে চলেছে যেখানে এই সমস্ত যন্ত্রে টাইটেনিয়াম প্রথম ব্যবহার করা হবে।
আরও পড়ুন: অর্থের অভাবে সরকারি হাসপাতালে বসছে কম পেসমেকার, উঠছে মান নিয়ে প্রশ্ন
সাধারণত স্টিলের পেসমেকার থাকলে রোগীরা এমআরআই এবং সিটি স্ক্যান করতে পারেন না। সেক্ষেত্রে টাইটেনিয়ামের ব্যবহার খুবই উপযোগী হবে বলেই মনে করছেন আধিকারিকরা। এর ফলে রোগীদের সুবিধা হবে বলে মনে করছে স্বাস্থ্য দফতর।জানা গিয়েছে, রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের তরফে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, পেসমেকার, স্ক্রু, হাঁটুর অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত ধাতব পাত টাইটেনিয়ামের হতে হবে। এতদিন স্টিলের পাত বসানো হতো। সে ক্ষেত্রে রোগীদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতো। তবে এবার থেকে টাইটেনিয়াম ব্যবহার করতে হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। ইতিমধ্যে ভেন্ডারদের এই বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। টাইটেনিয়ামের তৈরি পেসমেকার, স্টেন্ট অথবা কোনও অর্থপেডিক পাতে বিশেষ নম্বর দেওয়া থাকবে। অস্ত্রোপচারের সময় সেই ধাতব মানব শরীরে বসানোর আগে সেই নম্বরটি নথিভুক্ত করা হবে। যারফলে পরবর্তী সময়ে সুবিধা হবে।
ইতি মধ্যেই এসএসকেএম হাসপাতালে অর্থপেডিক ও কার্ডিওথোরাসিক সার্জারি বিভাগে টাইটেনিয়ামের ব্যবহার শুরু হয়ে গিয়েছে। এই বিষয়ে অর্থপেডিকের এক অধ্যাপক জানান, টাইটেনিয়াম শঙ্কর ধাতু। তাই শরীরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্ভাবনা নেই। তাছাড়া স্টিলের ধাতব যন্ত্র রোগীর শরীরে থাকলে এমআরআই করা যায় না। কারণ তড়িৎ চৌম্বকীয় ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা করতে পারে।
যদিও বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে এই পেসমেকার অথবা অর্থিপেডিক ইমপ্লান্টের সুযোগ নেই। তবে সরকারি হাসপাতালে সেই সুযোগ মিললে রোগীরা সুবিধা পাবেন। মেডিক্যাল কলেজ থেকে শুরু করে জেলা এবং অন্যান্য সরকারি হাসপাতালে টাইটেনিয়ামের যন্ত্র বসাতে হবে বলে জানা গিয়েছে। এর ফলে বেসরকারি হাসপাতালের তুলনায় সরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার বেশি হবে বলে মনে করছেন সরকারি আধিকারিকরা।