ইনফোসিসের মতো বড় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা এবার কলকাতায় নতুন ক্যাম্পাস করার উদ্যোগ নিতে চলেছে বলে খবর। বামফ্রন্ট সরকারের জমানায় ২০০৮ সালে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ইনফোসিস এখানে কাজ করবে বলে ঘোষণা করেছিল। কিন্তু সেটা বাস্তবায়িত হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আসে ২০১১ সালে। তারপর এই নিয়ে কোনও সাড়াশব্দ করেনি ইনফোসিস। অবশেষে এবার তারা বাংলায় নতুন প্রকল্পের কাজ শুরু করতে চায় বলে জানানো হয়। আর তাই ২০২৪ সালের ১৬ মার্চ নিউটাউনে নতুন অফিস চালু করতে চাইছে ইনফোসিস।
এদিকে এই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা কলকাতায় নতুন অফিস খুললে বিপুল পরিমাণ নিয়োগ অর্থাৎ কর্মসংস্থানের দরজা খুলে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ এখন নিউটাউনে যে ভাড়া বাড়ি নিয়ে অফিস চলছে সেখানে রয়েছে ৪০০ কর্মী। সেখানে এবার ৫০ একর জমির উপর নতুন অফিসে বাড়তি নিয়োগ করা যাবে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি এই বিষয়ে বৈঠক হয় রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং ওই দফতরের দু’জন অতিরিক্ত সচিব মনোজ আগরওয়াল ও সঞ্জয় দাসের সঙ্গে। তারপরই সমস্ত জট কেটে যায়। আর নতুন অফিস খোলার সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়ে।
অন্যদিকে ইনফোসিস সূত্রে খবর, এই নতুন অফিসে বাড়তি কর্মীর প্রয়োজন হবে। তাই বিপুল নিয়োগ এখানে ঘটবে। রাজ্যের শিক্ষিত–মেধাবী ছেলেমেয়েরা চাকরি পাবেন। একেবারে তথ্যপ্রযুক্তি তালুকে এই অফিস হওয়ায় এখানকার মেধা সম্পন্ন ছেলেমেয়ে খুঁজে পেতে অসুবিধা হবে না। ইনফোসিস সংস্থার আধিকারিকরা এই নতুন ক্যাম্পাস পরিদর্শন করার সময় একটা সফরের ব্যবস্থা করছেন। কারণ এখানে প্রায় ৩ হাজার ১০০ কর্মী নিয়োগ করতে চায়। এই প্রকল্পে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চলেছে ইনফোসিস। ২০২১ সালে রাজ্যস্তরের পরিবেশ পর্ষদকে দেওয়া রিপোর্ট থেকে এই তথ্য মিলেছে।
আরও পড়ুন: ‘ক্যাগ রিপোর্টে একশো শতাংশ মিথ্যা কথা বলা হয়েছে’, বিধানসভায় দাবি মুখ্যমন্ত্রীর
এছাড়া এই বিপুল বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় এই গোটা বিষয়টি পোস্ট করে সুখবর প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন। বাংলায় যে তথ্যপ্রযুক্তির বৃদ্ধি হচ্ছে সেটাও তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার মন্ত্রী। ২০০৮ সালে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে এই নয়া প্রকল্পের কথা ঘোষণা হলেও অনেক কষ্ট করে বহু বাধা পেরিয়ে তা সম্ভব করতে হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন মন্ত্রী বাবুল। ইনফোসিস আগে সেজ তকমা চাওয়ায় এখানে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। কারণ সেজ তকমা দিতে রাজি ছিলেন না বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু জমি দিতে রাজি ছিলেন। এই আবহে অবশেষে তথ্যপ্রযুক্তির সচিব দেবাশিস সেনকে বেঙ্গালুরুতে পাঠান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে বৈঠকে করে ইনফোসিসের সঙ্গে সমস্যা মেটে। তাই দেবাশিস সেন বলেন, ‘এটাই প্রথম প্রকল্প যেখানে ফ্রিহোল্ড জমির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, যা এখন নীতি হচ্ছে।’