গত রবিবার বর্ষরণের রাতে দিল্লিতে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো অঞ্জলি সিংয়ের ময়না তদন্তের রিপোর্ট সামনে এসেছে। গাড়ির চাকায় পা আটকে যাওয়ার পর ১৩ কিমি সেভাবেই ছেঁছড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ২০ বছর বয়সি তরুণীকে। সেই ঘটনায় ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে তাঁর দেহ। উঠেছিল যৌন হেনস্থার অভিযোগও। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসতেই আরও স্পষ্ট ভাবে বোঝা যাচ্ছে যে অঞ্জলির সঙ্গে কী হয়েছিল। মৌলানা আজাদ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকদের একটি বোর্ড অঞ্জলির দেহের ময়নাতদন্ত করে। মঙ্গলবার দুপুর ২টো নাগাদ ময়নাতদন্তের সেই রিপোর্ট তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। তাতে স্পষ্টতই লেখা, মৃতার যৌনাঙ্গে কোনও ক্ষত নেই। যার অর্থ, যৌন হেনস্থার শিকার হননি অঞ্জলি। তবে তাঁর মৃত্যু কতটা ভয়ানক, তা উঠে এসেছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে।
জনা গিয়েছে, গাড়ির চাকায় পা আটকে যাওয়ার পর সেভাবেই ১২ কিমি রাস্তার সঙ্গে ঘষা খেতে খেতে যেতে হয়েছিল অঞ্জলিকে। এর জেরে মাথা ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছিল অঞ্জলির। তাঁর মাথা ঘিলু মেলেনি। থেঁথলে গিয়েছিল খুলি। ভেঙে গিয়েছিল তাঁর শিরদাঁড়া। অঞ্জলির শরীরের ৪০টি স্থানে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। বেশ কিছু অংশ ঘষা লেগে, পুড়ে কালো হয়ে গিয়েছিল। পিঠের দিক থেকে বেরিয়ে এসেছিল ফুসফুসও বেরিয়ে এসে দেহের বাইরে ঝুলছিল। পিঠের চামড়া উঠে যায়। এর আগে তরুণীর মায়ের অভিযোগ ছিল, মেয়েকে যৌন হেনস্থা করা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এর কোনও উল্লেখ নেই। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মৃতার যৌনাঙ্গে কোনও ধরনের আঘাতের চিহ্ন মেলেনি।
উল্লেখ্য, বর্ষবরণের রাতে দিল্লির সুলতানপুরীতে একটি স্কুটারকে ধাক্কা মেরেছিল একটি গাড়ি। এরপর স্কুটার আরোহী তরুণীর পা আটকে গিয়েছিল গাড়ির নীচে। সেই অবস্থাতেই তরুণীকে কয়েক কিলোমিটার রাস্তা ছেঁছড়ে নিয়ে যায় গাড়িটি। ইতিমধ্যেই গাড়িতে থাকা পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিল অভিযুক্ত। দুর্ঘটনা ঘটনানো গাড়িটি মারুতি সুজুকি বলেনো। জানা গিয়েছে, ধৃত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন ক্রেডিট কার্ড এজেন্ট, একজন গাড়ির চালক এবং এক রেশন দোকানের মালিক রয়েছে। কাঞ্ঝাওয়ালা এলাকায় তরুণীর দেহটি গাড়িটি থেকে আলাদা হয়। এদিকে অভিযুক্তদের দাবি, একটি স্কুটি তাদের গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খায়। তবে তারা নাকি বুঝতে পারেনি যে তাদের গাড়ির নীচে তরুণীর দেহ আটকে গিয়েছে।