পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন–পর্বে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ভাঙড়। তারপর সেখানে নির্বিঘ্নে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়। ফলাফল প্রকাশও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তারপরও সেখানে ঢুকতে পারেননি বিধায়ক সওকত মোল্লা, তৃণমূল কংগ্রেস নেতা আরাবুল ইসলাম এবং আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। কারণ ভাঙড়ে ১৪৪ ধারা জারি ছিল। আজ, সোমবার তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টে এই কথা জানাল রাজ্য সরকার। এখানে ১৪৪ ধারা জারি থাকার প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। সেই মামলার আজ শুনানি ছিল। সেখানেই ভাঙড়ে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করার কথা জানিয়েছে রাজ্য। তাই ভাঙড়ের বিধায়কের মামলার যৌক্তিকতা নেই বলে দাবি রাজ্য সরকারের।
এদিকে কয়েকদিন আগে পর পর দু’বার ভাঙড়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। কিন্তু পুলিশ তাঁর পথ আটকে জানিয়ে দেন, এখানে ১৪৪ ধারা জারি আছে। তাই যাওয়া যাবে না। গত ১২ জুলাই এবং গত ১৭ জুলাই এই দুটি দিনে নওশাদকে ভাঙড়ে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। তখন কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন নওশাদ। এই নিয়ে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত মামলার শুনানি শোনেন। তখন রাজ্যের বক্তব্য জানানো হয় আদালতে। আর আদালতও তখন জানিয়ে দেয়, এখন বিধায়কের ভাঙড়ে ঢুকতে বাধা নেই।
আর কী জানা যাচ্ছে? ভাঙড় থেকে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করেছিলেন ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সওকত মোল্লা। বিধানসভার বাদল অধিবেশনে যোগ দেওয়ার সময় সওকত মোল্লা বলেন, ‘আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাই যাতে ভাঙড় থেকে ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়। ভাঙড়ের তপ্ত পরিবেশের জেরে ১৪৪ ধারা জারি হয়েছিল। আমার মনে হয়, এখন ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া উচিত। গরীব মানুষের অসুবিধা হোক সেটা আমরা কখনও চাই না।’ আর আজ সেখানে উঠে গেল ১৪৪ ধারা। সেটা রাজ্য সরকারের উদ্যোগেই। ফলে সওকতের অনুরোধ শোনা হল বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন না হওয়ায় ডেঙ্গি সমস্যা বাড়ছে’, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে ওয়াকআউট বিজেপির
ঠিক কী ঘটেছিল ভাঙড়ে? রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে তেতে উঠেছিল ভাঙড়। তার জেরে মোট ৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস এবং আইএসএফ কর্মীদের মৃত্যু হয়েছিল। যা নিয়ে আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি হয়। তারপর পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হলেও সেখানে যাতে কোনও অশান্তি না হয় তার জন্যই জারি করা হয়েছিল ১৪৪ ধারা। ভাঙড়ে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। এখন ভাঙড়কে কলকাতা পুলিশের আওতায় নিয়ে আসার প্রস্তাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে অবশেষে আজ, সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে ভাঙড় নিয়ে নিজের অবস্থানের কথা জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার।