পদত্যাগ করলেন সিউড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান অঞ্জন কর। একই সঙ্গে আজ, সোমবার সরে দাঁড়ালেন কাউন্সিলর পদ থেকেও। নেপথ্যে কি তৃণমূল কংগ্রেসের অন্তর্কলহ? এই প্রশ্নই এখন উঠতে শুরু করেছে জেলার রাজনীতিতে। যদিও চেয়ারম্যান জানান, তাঁর শারীরিক এবং পারিবারিক সমস্যার জেরেই এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু সূত্রের খবর, সিউড়ি পুরসভার চেয়ারম্যানকে সরানোর জন্য ১৩ জন কাউন্সিলর চাপ তৈরি করেছিলেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালেই তাঁর পদ নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছিল। যা আজ অবশেষে বাস্তবায়িত হল।
এদিকে এই অঞ্জন কর পরিচিত অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ বলে। এখন অনুব্রত মণ্ডল তিহাড় জেলে। তাই বাকিরা তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন। আজ সিউড়ির মহকুমাশাসক অনিন্দ্য সরকারের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দেন অঞ্জন কর। এমনকী ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদ থেকেও পদত্যাগ করেন তিনি। সিউড়ি পুরসভার ২১ জন কাউন্সিলর তৃণমূল কংগ্রেসেরই। তার মধ্যে ১৩ জন ৬ মাস আগে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এমন আবহে কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক করেন সাংসদ শতাব্দী রায় এবং বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী। তারপর বিষয়টি থিতিয়ে যায়। পঞ্চায়েত নির্বাচন মিটতেই সক্রিয় হয়ে ওঠেন ১৩ জন কাউন্সিলর। অবশেষে সেই চাপ নিতে না পেরে পদত্যাগ করলেন তিনি বলে সূত্রের খবর।
অন্যদিকে কিছুদিন আগে অঞ্জন কর এবং পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বিদ্যাসাগর সাউকে সরানোর দাবি তুলে বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীকে চিঠি দেন ১৩ জন কাউন্সিলর। সেই চিঠিতে লেখা অভিযোগ, সিউড়ি পুরসভা এলাকায় পরিষেবা খুব খারাপ জায়গায় পৌঁছেছে। এটা চলতে থাকলে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মানুষের কাছে গিয়ে ভোট চাওয়া সম্ভব হবে না। কিন্তু চিঠির পর কোনও অ্যাকশন নেওয়া হয়নি। তারপর থেকেই চাপ বাড়তে শুরু করে। আজ পদত্যাগ করলেন সিউড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান। কয়েকদিন পর ভাইস চেয়ারম্যানও পদত্যাগ করতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘এটা বেদনাদায়ক রাজ্যের একজন মন্ত্রী জেলে গিয়েছেন’, পার্থর নাম না করে খোঁচা রাজ্যপালের
ঠিক কী বলছেন অঞ্জনবাবু? এই পদত্যাগ নিয়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছি সিউড়িতে। যদিও প্রবণবাবু জানান, শারীরিক এবং পারিবারিক সমস্যার জেরেই পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তবে চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিতেই দলবদলের গুঞ্জনও তৈরি হয়েছে। দলবদল নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে অঞ্জন কর সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘দল থেকে আমায় কিছু বলেনি। আজ তো আমি পদ ছাড়লাম। দল করব কি না সেটা পরে ভাবব। অনুব্রত মণ্ডল আমাকে এই চেয়ারে বসিয়েছিলেন। ওঁর বিকল্প কেউ নেই।’