শুক্রবার মানেই স্ক্রিনে চোখ, আর অপেক্ষার বেড়া ভেঙে সিনেমায় ডুব। নতুনের স্বাদটাই তো আলাদা। পছন্দের অভিনেতা আর অভিনেত্রীর চোখে চোখ রাখতে প্রথম দিন প্রথম বড়ো পর্দায় দেখা, এ তো বন্ধুদের কাছে গর্ব করার মতো। বাড়ির টি, ভি তো মুখ “ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে”, তাই তো বড়ো পর্দার খোঁজ। প্রেমিকার হাত ধরে, কিংবা আইনক্সের কোণা বেছে নিয়ে প্রেমের সাথে প্রথম দিনের প্রথম শো “ভোলা যায় নাকি?র
আসুন চোখ রাখা যাক ২৩ শে মার্চ “স্ক্রিনে দুপুরে ” খবর ২৪ এর পাতায় –
প্রথমেই বলব “Daas Dev”( দ্যস দেব) নিয়ে। সুবীর মিশ্রের পরিচালনায় এক রোমান্টিক রাজনৈতিক থ্রিলার। এই গল্পের উৎস যদি বলতে হয় তবে দেখা যায় যে পরিচালক কোথাও দেবদেস ও হেমলেটের মধ্যে মিল খুঁজেছেন। একসময় পরিচালককে বলা হয়েছিল যে তিনি যেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাসকে প্রতিষ্ঠা দেন। আর সেখানে অভিযোজন করতে গিয়েই বিরক্তি তাঁর।
দেবদাস একসময় রাজনৈতিক অভিজাত্যের প্রতিভূ হয়েছে । আবার তা গতি সুরাপানের সাধারণীতে। এবার সামন্ততান্ত্রিক পরিসর দেখতে গিয়ে কিছু নারীবাদী সত্ত্বা দেখাতেই হতো। আবার চন্দ্রমুখী সে রাজনীতি বোঝে কিন্তু চারপাশের ঘেরাটোপ তাকে আঘাত দেয়। কিন্তু সামন্ততান্ত্রিক বাড়ির আশ্রয়স্থলে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব যেন প্রকট হয়েছে। আসলে রাজনীতি, প্রেমের প্রতারণা, অবিশ্বাসের চক্র থেকে মুক্তিটাই প্রয়োজন। এখানে পারো , চন্দ্রমুখী আর দেবিদাস প্রত্যেকেই মুক্তির পিয়াসী।এককথায় বাঁধন বা আসক্তি থেকে সম্যক মুক্তি । কিন্তু মূল অংশে দেবদাসের মৃত্যু আর দুই নারী জীবিনের সাথে আত্তীকরণ করে বুঝে গেছেন যে জীবনের আসক্তি থেকে মুক্তিটাই পাওয়াটাই আসল। আর সেই প্রাপ্তি থেকেই পরিচালকের আত্তীকরণ। আর কালের প্রভাব তো সামগ্রিক, এটা অস্বীকার করা যায় না।
https://youtu.be/ihwimHKNTnI?t=8
অভিনয়ে আছেন, হায়দ্রাবাদের অদিতি রাও হিডারি, ( চন্দ্রমুখী চরিত্র), রিচা চাড্ডা ( পারো) ,শ্রীনগর জম্মুর রাহুল ভাট, (দেবদাস)
।এছাড়াও আছেন সৌরভ শুক্লা, দালিপ তাহিল, বিনীত কুমার সিংঘ।!
আর গান বলতে ” Sehmi Hai Dhadkan ” আতিফ আসলাম “, মানেই কন্ঠের সৌকর্য বিধান।
****************
এরপর বলব! ” Baa Baa Black sheep “ এর কথা । গোয়াকে ভিত্তি করে লেখা। এখানে মানবিক অনুভূতি, উত্থান – পতনের সাথে, সূক্ষ্ম টাইমিং সঙ্কেত। আর হাস্য রসের আদল থাকলেও আছে থ্রিলার মিশ্রণের চারিত্রিক সূক্ষ্মাতি সূক্ষ্ম অনুভূতির আদল। তবে প্রয়োজনীয়তা যে, মানবিক সূক্ষ্ম অনুভূতির সাথে চিন্তনের স্তরে কিভাবে পরিবর্তনের ধারাবাহিকতা আনে সেটা না দেখলে বোঝা সম্ভব নয়। এক অনুভূতিতে বাড়ির আপন মানুষকে চেনার পর অন্যভাবে যখন নিজের কাউকে চেনা যায় আর অতীতের প্রেক্ষাপট সামনে আসে তখনই মোড় ঘোরে গল্প। তবে জীবনের কথা, বাস্তবের মোড়কে আঁকড়ে নেওয়া কথার বিস্তৃতিতে পথে অগ্রসর হওয়স।
অভিনয়ের সাথে যে ব্যক্তিত্ব নিয়ে বলব, আসুন সেই নামগুলিতে একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।
অনুপম খের, অনু কাপুর, মনীষ পাল, কৃষ্ণ কুমার মেনন, মঞ্জরী পাদনিস, শাহিল ভেদ প্রমূখ।
এর চলচ্চিত্রে কন্ঠ হিসাবে যাদের জন্য দর্শক উৎসুক সেই ব্যক্তিত্ব বর্গ হলেন *শান, মনীষা চক্রবর্তী, মিল্কা সিং,সনু নিগম,মহালক্ষ্মী, কণিকা কাপুর, কুমার স্বপন প্রমুখ।
এবার বাকিটা দর্শকের সুখে সুখী অভিনয়। আর সেখানেই সার্থকতা।
****************
এবার বলব “Sherlock Gnomes”, পরিচালক: জন স্টিভেনসন।
উৎস : Sherlock Holmes আর Romeo and juliet
অভিনয়ে – জন দ্বীপ ২, এমিলি ব্লান্ট, জেমন্স অ্যাভয়, ইজিওফর প্রমূখ।
কন্ঠে : এলটন জন, চরিস বাকন।
যখন জুলিয়েট এবং তার সাথী প্রথমে তাদের বন্ধু ও পরিবারের সাথে শহরে আসেন,তখন তাদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ বিষয় হলো বসন্তের জন্য তাদের নতুন বাগানের প্রস্তুতিকরণ । যাইহোক, তারা শীঘ্রই আবিষ্কার করে যে কেউই লন্ডন জুড়ে বাগানের সর্বত্র অপহরণ করছে। মামলার তদন্তের জন্য লন্ডনের বাগানের গোমেসের বিখ্যাত গোয়েন্দা এবং শপথী অভিভাবক তার পার্শ্বচরিত ওয়াটসনকে নিয়ে আসে। এইভাবে বিবিধ চরিত্রের সাথে এক করে গল্পের উত্তরণ। বাকিটা দর্শকের উপর দেওয়া যাক, কি বলে রেটিং সেটাই দেখার।
https://youtu.be/TR-sefx8ncI?t=4
==================================
এবার বলব “Mary Magdalene “,
মেরি মাগদালেন “
লিখেছেন:
হেলেন এডমন্ডসন
ফিলিপ গসলেট
অভিনয়
রুনি মারা
জ্যাকুইন ফিনিক্স
চিবতেল ইজিওফর
তেহর রহিম
এর মেরি মাগদালেন হলেন সেই বিবলিকান নারী, যিনি যিশুর ক্রুশ বিদ্ধ এবং প্রত্যাবর্তনের স্বাক্ষী।আর তাকে ভিত্তি করেই “সি স ফিল্মস “আর
ইউনিভার্সাল ” এর যৌথ পরিচালনায় এই চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে। যিশুর ভূমিকা অভিনয় করেছেন জোয়াকিন ফিনিক্স। মেরি মাগদালেন কে আমরা অতীতে যে সিনেমায় দেখি ‘দ্য প্যাশন “,‘দ্য লাস্ট টেম্পটেশন অফ ক্রাইস্ট’। তবে উৎসুক দর্শক কেবল প্রকাশের জন্য অপেক্ষায়রত।
====================<===========
এবার আসি বাংলা সিনেমায়, “রাজা রাণী রাজী “। অভিনয়ে বনি ও ঋত্বিকা সেন। দুজনের মধ্য ব্যক্তিগত কেমিস্ট্রিটা সফল করেই এই সিনেমার রোনান্টিকতা। রোমান্টিক গানে “যা হবে দেখা যাবে ” গানটি দর্শকের মন কাড়বে বলে মনে হয়। তবে এটা বলতে বাধা নেই যে, ইয়াশ দাশগুপ্তের দর্শকদের কাছে এটা যথেষ্ট সুখবর। বনির ইশারা আর ঋতিকার মিষ্টি লুক যেন পরিণতি ইঙ্গিত করে।
https://youtu.be/O5qyG6cexEM?t=3
==============================
সোহম চক্রর্বতী, ঋত্বিক চক্রবর্তী, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত কে নিয়ে আসছে রঙ বেরঙের কড়ি।
পরিচালনায় রঞ্জন ঘোষ,ও প্রযোজক রূপা দত্ত।এক সময় কড়ির খুব চল ছিল। সেখানে নামকরণে দেখেছি ” কড়ি দিয়ে কিনলাম ” অর্থাৎ এটা ছিল একটা মাধ্যম। কিন্তু সেই জায়গাটা দখল করে নিল রুপো আর পরে টাকা, নোট আকারে সামগ্রিক ভাবে স্থান দখল করে নিয়েছিল। এই যে পরিবর্তনের ধারা তা সামগ্রিক রূপ পেয়েছে ছবিতে। তবে একদম গ্রাম্য নিপাট সাধারণের জীবন, খোলামেলা সাবিলীল মাটির মানুষের মতো করে সোহমের নিজেকে প্রতিষ্ঠা দর্শক চরিত্র ছুঁয়ে যাবে বলে আশা করা যায়, তবে ঘরের কথার সার্থকতা।বাকিটা দর্শক বলবে।
তবে আর দেরী কিসের, হলি, বলি, টলি উৎস থেকে গল্প সবটাই জানা হয়ে গেলো। এবার দর্শকের আসনে একবার চোখ মুগ্ধ করা আলাপ নিয়েই সার্থকতা পাক চলচ্চিত্র, এটাই সার্থকতা।