Afghanistan China: চিনের প্রতিশ্রুতি মিথ্যা ছিল। পাকিস্তান চরম ভোগান্তিতে। বেজিংয়ের মাস্টারস্ট্রোক বলা প্রজেক্ট এখন হতাশা, কেন? আমেরিকা এই একটা কথা না শোনার দাম প্রত্যেকটা মূহুর্তে পাকিস্তানকে দিতে হচ্ছে। বেজিংয়ের ফাঁদে বোকার মতো পা দিয়েছে আফগানিস্তানও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন অঙ্কে ভুল হলে তালিবানও পস্তাবে। চিন-পাকিস্তান মে মাসে ইসলামাবাদে বসে যে ডিল করল তাতে ভারতের মাথাব্যাথার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
সিপিইসি চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর নিয়ে পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ। কিন্তু চিনের বন্ধু সেজে থাকতে শাক দিয়ে মাছ আর কতদিন ঢাকবে ইসলামাবাদ? নয়া ডিল হয়েছে ইসলামাবাদে বসে৷ তাতে আশার আলো দেখা যাবে কি? নাকি আফগানিস্তানও জড়িয়ে যাবে সেই একই জালে। বিদেশি ঋণ নিয়ে ক্রমাগত দেশ চালাচ্ছে পাকিস্তান। ২০২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৬ জুনের মধ্যে ৮০ বিলিয়ন ডলার ঋণ মেটাতে হবে তাদের। কূটনৈতিক মহল বলছে এমনটা নয় যে চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর কোনো স্ক্যাম ছিল। চিনা প্রেসিডেন্ট জিনপিং একে ‘দ্য প্রজেক্ট অব দ্য সেঞ্চুরি’ বলেছিলেন। গ্রাউন্ড রিয়ালিটি বলছে পাকিস্তান পারেনি৷ আর কতটা পারবে সেই আশাও এখন করা যায় না।
দেখা যায় ৪৬ বিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্প এখন ৭০ বিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে। অনেকে এটাও জানেন প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হওয়ার কারণে ২৮ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ রীতিমত ধূলিস্যাৎ হয়ে যায়। সিপিইসির-ই বড় প্রজেক্ট হল চিনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ প্রকল্প। পাকিস্তান পেরিয়ে এ বার পা রাখতে রাখছে আফগানিস্তানে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন এর জেরে পাকিস্তানের পরিস্থিতি দেখার পরও চিনের ওপর কীভাবে ভরসা রাখতে পারল তালিবান? তালিবানশাসিত আফগানিস্তানে এমনিতেই অর্থনীতি নড়বড়ে। তালিবানের শাসনে আন্তর্জাতিক স্তরে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে দেশটির উপর। এক্ষেত্রে অনেকেই বলছেন আসলে ব্যাপার সেটা নয়। এই প্রজেক্টের হাত ধরেই এবার ভারতের উত্তর-পশ্চিমে থাকা আফগানিস্তানে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে বেজিং।
২০১৫ সালে এই সড়ক প্রকল্প চালুর সময় বেজিং প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এর ফলে পাকিস্তানের বার্ষিক আর্থিক বৃদ্ধি অন্তত আড়াই শতাংশ হবে বাড়বে কর্মসংস্থান। একটাও প্রতিশ্রুতিও বাস্তবায়িত হয়নি বরং ক্রমশ দুর্বল হয়েছে পাক অর্থনীতি। ভালো করে বুঝুন চিন তাদের উৎপাদিত পণ্য বিআরআই সড়ক পথে রফতানি করছে পাকিস্তানে। আর তার ফলে মার খাচ্ছে পাক উৎপাদন ক্ষেত্র। এদিকে পাকিস্তানের ক্ষুব্ধ বণিক মহল বলছে সিপিইসি ধরে চিন থেকে পাকিস্তানে কোনও পণ্য নিয়ে আসা যতটা সহজ, পাকিস্তান থেকে কোনও কিছু চিনে নিয়ে যাওয়া ততটাই কঠিন। কারণ চিনা কর্তৃপক্ষের নানা বিধিনিষেধ রয়েছে।
তালিবান সরকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের আসার নয়া ডিল লুফে নিয়েছে ঠিকই কিন্তু পাকিস্তানের দিকে তাকানোর পর মনে করা হচ্ছে আফগানিস্তানেও এই প্রজেক্ট কোনও সুরাহা দিতে পারবে না। আমেরিকা সহ পশ্চিমি দুনিয়া কিন্তু পাকিস্তানকে সতর্ক করেছিল। কান কামড়ে তারা বলছিল সিপিইসি-র লাভের গুড় পুরোটাই চিনের ঘরে যাবে পাকিস্তানকে ব্যবহার করে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হবে৷ বাস্তব খুব একটা ব্যাতিক্রম হয়নি। চিনের প্রভাব এবার তালিবানের দেশে ঢুকলে কি পরিণতি হয় সেটাই দেখার।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়