সাম্প্রতিক সময়ে জ্বালানির বর্ধিত দাম থেকে কেন্দ্র ৪ লক্ষ কোটি টাকা তুলেছে বলে দাবি করে, সেই টাকা রাজ্যগুলোকে বণ্টনের দাবি তুললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তিনি দাবি করেছেন, এই অর্থ রাজ্যগুলোর মধ্যে সমান ভাবে বিতরণ করা উচিত।
এ দিন বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে বক্তৃতা করার সময় মমতা বলেন, পেট্রোল, ডিজেল থেকে ক’দিন আগে কেন্দ্র উৎপাদন শুল্ক কমিয়েছে। পাঁচ রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখেই শুল্ক হ্রাসের পথ ধরতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্র।
তিনি বলেন, “পেট্রোল, ডিজেল এবং রান্নার গ্যাসের উপর অতিরিক্ত কর চাপিয়ে ৪ লক্ষ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছেন কেন্দ্রীয় সরকার। এখন তারা চাইছে রাজ্যগুলো ভ্যাট কমাক। রাজ্যগুলো কোথা থেকে টাকা পাবে? কেন্দ্রের উচিত ওই ৪ লক্ষ কোটি টাকা রাজ্যগুলোকে সমান ভাবে ভাগ করে দেওয়া”।
তাঁর কথায়, “এখন ভোট এগিয়ে আসতেই দাম কমাচ্ছে কেন্দ্র। এক বার তা মিটে গেলেই আবার দাম বাড়াবে। যাঁরা এখন জ্বালানির দাম নিয়ে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করছেন, তাঁরাই বলুন, রাজ্য কোথা থেকে টাকা পাবে। আমাদের প্রাপ্য বকেয়াই এখনও মেটায়নি কেন্দ্র”।
রাজ্যগুলিকে ভ্যাকসিন বণ্টনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বাংলার প্রতি সৎমায়ের মতো আচরণ করার অভিযোগ তুলেছেন মমতা। বলেন, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যকে যে পরিমাণে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, বাংলা পেয়েছে তুলনামূলক ভাবে অনেক কম। ভ্যাকসিনের একটা ডোজ-ও যাতে নষ্ট না হয়, সে ব্যাপারটাকে আমরা নিশ্চিত করেছি।
বক্তৃতার সময় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে নানা পরিসংখ্যান তুলে ধরেন মমতা। বলেন, পদে পদে আর্থিক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ভরতুকি দিয়ে চলেছে। রাজ্যের প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-কে তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘‘নোটবন্দি করে লক্ষ্মীর ঝাঁপি কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। আমরা তাই সেই লক্ষ্মীর ঝাঁপি ফিরিয়ে দিচ্ছি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প করে’’। জানান, আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে যাবে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প। ১৬ নভেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চালু থাকবে ‘পাড়ায় সমাধান’ প্রকল্প।