রাজনৈতিক ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষেত্রে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জুড়ি মেলা ভার। এবার কলকাতা পুরসভার মেয়র পদ নিয়েও ফের চমক দিতে চলেছেন তিনি। সূত্রের খবর, কলকাতার পরবর্তী মেয়র হিসেবে মহিলা মুখকেই তুলে ধরে পুরভোটে লড়াইয়ের ময়দানে নামার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে মনস্থির করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতার ইতিহাসে প্রথম মহিলা মেয়র হিসেবে তিনি ভেবে রেখেছেন রাজ্যের দুই পরিচিত মুখ ও রাজ্য মন্ত্রিসভার দুই সদস্যের নাম। ওই দু’জন হলেন রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা ও রাজ্যের পুর মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তবে লড়াইয়ের দৌড়ে চন্দ্রিমার চেয়ে সামান্য এগিয়ে শশী পাঁজা। যদিও এ বিষয়ে তৃণমূলের কোনও শীর্ষ নেতাই মুখ খুলতে চাননি।
রাজ্যে বিধানসভার ভোটের পরেই ‘দলে এক পদ এক ব্যক্তি’ নীতি চালু করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মূলত সংগঠন আর প্রশাসন সুচারুভাবে চালাতেই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যার ফলে একইসঙ্গে দুটি লাভজনক পদে থাকা যাবে না। সূত্রের খবর, ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ চালু হওয়ার ফলে একইসঙ্গে বিধায়ক ও কাউন্সিলর পদে থাকা যাবে। এমনকী জেলা সভাপতিও বিধায়ক কিংবা কাউন্সিলরের পদে থাকতে পারবেন। তবে জেলা সভাপতি কিংবা মন্ত্রিত্ব কিংবা মেয়র পদ একসঙ্গে রাখা চলবে না। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা বর্তমানে মুখ্য প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা ফিরহাদ হাকিম বর্তমানে রাজ্যের পরিবহণ ও আবাসন দফতরের মতো দুই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। ফলে তাঁকে ফের আর মেয়রের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে বসাতে চাইছেন না তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
ফলে তাঁর পরিবর্তে ইতিমধ্যেই বিকল্প মুখের সন্ধান শুরু হয়েছে। কলকাতা পুরসভা গঠন হওয়ার পরে মেয়র পদে কোনও মহিলা বসেননি। পুরুষরাই পুরসভার শীর্ষ পদে বসেছেন। সেই ট্র্যাডিশন ভাঙতে কোনও মহিলাকে মেয়র পদে চাইছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর দৌড়ে রয়েছেন, রাজ্যের পুর ও নগর উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। ওই দু’জনের মধ্যে একজনকে মন্ত্রীপদ থেকে সরিয়ে এনে মেয়র পদে বসানোর বিষয়টি ভাবা হচ্ছে। তবে সামান্য হলেও এগিয়ে শশী পাঁজা। গত কয়েক বছর ধরে মন্ত্রী হিসেবে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তাছাড়া কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর ও মেয়র পারিষদ হিসেবে দায়িত্ব সামলানোর অভিজ্ঞতাও তাঁর ঝুলিতে রয়েছে। তাঁকে ঘিরে কোনও বিতর্ক নেই। তাছাড়া প্রয়াত অজিত পাঁজার পুত্রবধূ হিসেবে তাঁর আলাদা একটা পরিচিতি ও সম্মান রয়েছে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁকে ভীষণ পছন্দ করেন।