আপাতত রাজ্যের ২১টি আসনে আব্বাসরা তাঁদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছেন। দেখা যাচ্ছে, গত চার দশক ধরে বামফ্রন্ট তথা সিপিএমের হাতে থাকা একাধিক আসন আব্বাসের দলকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তালিকা বলছে, রায়পুর, মহিষাদল, চন্দ্রকোণা, কুলপি, মন্দিরবাজার, জগৎবল্লভপুর, হরিপাল, খানাকুল, মেটিয়াবুরুজ, উলুবেড়িয়া, রানাঘাট উত্তর পূর্ব, কৃষ্ণগঞ্জ, সন্দেশখালি, চাপড়া, অশোকনগর, আমডাঙা, আসানসোল উত্তর, এন্টালি, ক্যানিং পূর্ব, জাঙ্গিপাড়া, মধ্যমগ্রাম, হাড়োয়া, ময়ূরেশ্বর, মগরাহাট পূর্ব আসনে প্রার্থী দেবেন আব্বাসরা।
তার আগেই উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। সংযুক্ত মোর্চার জোটসঙ্গী ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (ISF) নির্বাচনী প্রতীক খাম হলেও সেটা নাকি আব্বাস সিদ্দিকির দলের নিজস্ব প্রতীক নয়। এবং আইএসএফ প্রার্থীরাও নিজের দলের নামে মনোনয়নও পেশ করেননি। বরং সেই জায়গায় বিহারের অন্য একটি দলের নাম লেখা হয়েছে। যার নাম ‘রাষ্ট্রীয় সেকুলার মজলিশ পার্টি।’ ফলে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে যে ‘আইএসএফ’ নামে কোনও দল লড়ছে না সেটা পরিষ্কার হয়ে গেল।
সূত্র মারফৎ এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কেন অন্য দলের প্রতীক ব্যবহার করে বাংলায় ভোটে লড়ছে আইএসএফ? কেনই বা মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় অন্য দলের নাম লেখা হচ্ছে? এই প্রসঙ্গে আইএসএফ নেতৃত্বের দাবি, বিহারের ওই দলের সঙ্গে তাদের জোট হয়েছে। যে কারণে সেই দলের প্রতীক ব্যবহার করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট দলটির ঘোষণা গত ২১ ফেব্রুয়ারি কলকাতা প্রেস ক্লাব থেকে হয়েছিল। কিন্তু, এই অল্প সময়ের মধ্যে আব্বাস সিদ্দিকির দল নির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতি পায়নি, কোনও দলীয় প্রতীকও এত কম সময়ে পাওয়া যায়না। যদি নির্দল হিসেবেও সব প্রার্থীরা বিভিন্ন কেন্দ্রে দাঁড়াতেন সেক্ষেত্রে পৃথক প্রতীক ব্যবহার করে আদালা আলাদা কেন্দ্রে লড়তে হত তাদের। তেমনটা হলে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের প্রতীক চিহ্নিত করতেও সমস্যা হত।
ঠিক এই কারণেই বিহারের দল রাষ্ট্রীয় সেকুলার মজলিশ পার্টির প্রতীক নিয়েই আইএসএফ নির্বাচনে লড়বে বলে স্থির হয়েছে। কিন্তু অন্য দলের প্রতীকে লড়া কি আদৌ সম্ভব? এই নিয়ে আব্বাসের দলের যুক্তি, যেহেতু ওই দলের তাদের জোট রয়েছে তাই কোনও সমস্যা নেই। এখনও পর্যন্ত যে দু’টি মনোনয়ন জমা পড়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে রাষ্ট্রীয় সেকুলার মজলিশ পার্টির নামেই মনোনয়ন জমা দিয়েছেন আব্বাসের দলের প্রার্থীরা।
কিন্তু, ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই বাম শরিকদলগুলির পক্ষ থেকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, আমরা তো আইএসএফ-র সঙ্গে জোট করেছি। যাদের নিজের প্রতীক নেই, প্রতীক ধার করতে হচ্ছে, তাদের সঙ্গে জোট কীভাবে টিকবে? এই বিষয়ে সিপিএম-র শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তাঁরা প্রসঙ্গটি এড়িয়ে গিয়েছেন।