একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে জোরদার প্রচার করে তারকেশ্বর–ডিমাপুর কিষান রেল চালু হয়েছিল। ২০২১ সালের ২৯ জানুয়ারি ঘটা করে উদ্বোধনও হয়। কৃষকদের উৎপাদিত ফসল সহজে বাজারে নিয়ে যেতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে তখন জানিয়েছিল রেল। অর্থাৎ সরাসরি প্রচারে এসেছিল কৃষকের প্রতি দরদ। কেন্দ্রীয় সরকার কৃষকদের জন্য ভাবছে– ভোট প্রচারে এটাই তুলে ধরা হয়। কিন্তু কয়েক মাস চলার পর বন্ধ হয়ে গেল কিষান রেল। সুতরাং প্রশ্নের মুখে কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষক–দরদ।
কেন বন্ধ হল কিষান রেল? এই কিষান রেল বন্ধের নেপথ্য অন্য এক রহস্য আছে। আর সেটাই এখন জানাজানি হয়ে গিয়েছে। জনৈক ব্যবসায়ী মন্টু সামন্ত তারকেশ্বর থেকে ডিমাপুরে আলু পাঠানোর জন্য রেলদফতরের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই আবেদনকে হাতিয়ার করে কৃষক দরদ দেখাতে চালু হয় এই ট্রেন। কিন্তু এমন ট্রেনের চাহিদা না থাকায় আলু পাঠানো বন্ধ হয়ে যায়। আর তারপরই বন্ধ হয়ে যায় এই ট্রেনও। এই বছর আলু পাঠানোর জন্য আবার রেল চালু করার আবেদন জানিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী মন্টু সামন্ত।
য়িক কী জানিয়েছেন মন্টু সামন্ত? এই ট্রেন বন্ধ নিয়ে এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এবার সংবাদমাধ্যমে মন্টুবাবু বলেন, ‘ডিমাপুরে আলু পাঠানোর জন্য রেক চালু করার আবেদন জানিয়েছিলাম রেলদফতরে। কিন্তু সেভাবে বাজারে চাহিদা ছিল না আলুর। ২০২১ সালের পর আর আলু পাঠানো হয়নি। বন্ধ হয়ে যায় ট্রেনও। ১০–১৮টি বগিতে আলু যেত। ট্রেনটি আবার চালু করার আবেদন জানিয়েছি রেলকে।’ আর বিষয়টি নিয়ে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক জানান, আবেদনের ভিত্তিতে ট্রেনটি চালু হয়েছিল। কিন্তু চাহিদা না থাকায় বন্ধ হয়ে যায়।
এলাকার বিধায়ক ঠিক কী বলছেন? এই নিয়ে তারকেশ্বরের বিধায়ক রামেন্দু সিংহরায় কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারকে। তিনি বলেন, ‘মানুষকে পুরো বোকা বানানোর চেষ্টা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ভোটের আগে একটা ভাঁওতা দিয়ে কৃষকদের ভুল পথে পরিচালিত করতেই ট্রেনটি চালু করা হয়েছিল। যদি বাস্তবে কৃষকদের জন্যই করত, তাহলে এটা চালু থাকত। তারকেশ্বরে রেক পয়েন্ট আছে। কৃষকরা মালপত্র আনলে তা লোড করার ক্ষেত্রে অসুবিধা ছিল না। লক্ষ্য শুধুমাত্র ভোট টানা। ওরা আদতে কৃষক-দরদী নয়।’ তারকেশ্বরে উড়ালপুল ও আন্ডারপাস প্রয়োজন। কিন্তু এই নিয়ে রেলের কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।