মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাদা স্করপিওটা সবেমাত্র এসে দাঁড়িয়েছিল মিষ্টির দোকানের সামনে। মুখ্যমন্ত্রীকে চাক্ষুস করার সাধ ছিল তাঁরও। কিন্তু দোকান ফাঁকা রেখে যাওয়াটা তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি। বাধ্য হয়ে দোকানেই বসে মাথা উঁচিয়ে দেখার চেষ্টা করছিলেন। ভিড় আগে থেকেই ছিল। কিন্তু গাড়িটা আসতেই যেন জনস্রোতে ভাসে এলাকা।
কিছুটা ঠেলাঠেলিও হতে শুরু করে। এরই মধ্যে গাড়ির সামনের দরজা খুলে সবেমাত্র পা-টা বার করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আচমকাই বাইরে থেকে ধাক্কা লেগে দরজা বন্ধ হয়ে যায়। আকস্মিকভাবে পায়ে মারাত্মক চোট লাগায় মাটিতে পড়ে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ব্যস, তার পরের পুরো ঘটনাটতেই আজ উত্তাল বাংলা। নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহত হওয়ার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিতাই মাইতির বয়ানে উঠে এলে অকুস্থলের পূর্ণ বিবরণ।
আপাতত নন্দীগ্রামের সেই মিষ্টির দোকানের মালিক নিতাই মাইতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়েছেন জেলাশাসক বিভু গোয়েল এবং পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ। ঠিক কী ঘটেছিল বুধবার সন্ধ্যায়? জানতে তদন্ত করছে পুলিশ।
ইতিমধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ গতকালের ঘটনা সংক্রান্ত প্রাথমিক রিপোর্ট পাঠিয়েছে নবান্নে। সেই রিপোর্টে হামলার উল্লেখ নেই। তাতে দুর্ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ নবান্নের কাছে ওই ঘটনার তদন্ত করে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য আরও সময় চেয়েছে।
বুধবার নন্দীগ্রামে বিরুলিয়ার মন্দিরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিকেলে সেখান থেকে বেরনোর সময়েই পায়ে আঘাত লাগে তাঁর। অসুস্থ মমতাকে কোলপাঁজা করে নিয়ে যাওয়া হয় গাড়ির পিছনের সিটে। সেখান থেকে গ্রিন করিডর করে সোজা এসএসকেএম-এর উডবার্ন ওয়ার্ডে আসে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়।
পায়ে আঘাত লাগার ঘটনায় ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৪-৫ জন মিলে ইচ্ছে করে তাঁকে ধাক্কা মেরেছে বলে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর। স্থানীয় পুলিশ, এসপি কেউ ছিল না ঘটনাস্থলে। অভিযোগ খোদ তুলেছেন খোদ পুলিশমন্ত্রী।