প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় বৃহস্পতিবার যোগ দিলেন বিজেপিতে। কোথাও কোনও রাখঢাক নেই। সরাসরি গেরুয়া পতাকা হাতে তুলে নিলেন প্রাক্তন বিচারপতি। আর সেই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়কে নাম না করে একেবারে খুল্লমখুল্লা আক্রমণ মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের।
বৃহস্পতিবার কলেজ স্কোয়ার থেকে তৃণমূলের মিছিল। সেই মিছিলে নেতৃত্ব দিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। আর সেই মিছিল শেষের সভা থেকে মমতার নিশানায় অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়।
মমতা বলেন, আজ রবি ঠাকুরের কথা দিয়েই বলি, বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। ডোরিনা ক্রশিংয়ের মিছিল শেষ করে মমতার মিটিং। সেখানে তিনি বলেন, বিচারের চেয়ারে বসে বিজেপি বাবু বিজেপি পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন। এঁদের দিকে তাকিয়ে আদৌ মানুষ কি বিচার পাবেন? জুডিসিয়ারির ক্ষেত্রে আমি জাজের বিরুদ্ধে বলতে পারি না।কিন্তু আমি জাজমেন্ট নিয়ে বলতে পারি। আমিও আইনজীবী ছিলাম। এখন নই। আগে ছিলাম। আইনের কোনটা ঠিক, কোনটা বেঠিক সেটা আমরাও জানি।
তবে সরাসরি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের নাম মুখে নেননি মমতা। তিনি বলেন, এরা সব কেউকেটা, তবে আমি খুশি তাদের মুখোশটা খুলে পড়েছে। হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর চাকরি নিয়ে বড় নেতা হয়ে গিয়েছিলেন। টিভিতে ইন্টারভিউ করছে, অভিষেকের নাম করে খারাপ কথা বলছে। আপনি এখন কোথায় গেলেন? কাল থেকে আপনার রায় জনগণ দেবে…মমতার এই কথা শুনে হাততালিও পড়ে যথেষ্ট।
মমতা বলেন, আপনি হাজার হাজার মানুষের চাকরি খেয়েছেন, কাল থেকে আপনার রায় জনগণ দেবে। তৈরি থাকুন। আপনি যেখানে দাঁড়াবেন স্টুডেন্টদেরই নিয়ে যাব। কারণ যাদের চাকরি আপনি নিয়েছেন তারাই লড়াই করবে এবার। বলতে পারতেন ওই প্যানেলটা ক্যানসেল করুন। কোনও সুযোগ না দিয়ে ওয়ান সাইডেড গেম। এখনও পাঁচ লক্ষ চাকরি রেডি আছে। আর এই চাকরি যে বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেস দিতে দিচ্ছে না সেদিকেও ইঙ্গিত করেন মমতা।
বিচারপতির চেয়ারে যখন তিনি ছিলেন তখন থেকেই তৃণমূলের চক্ষুশূল তিনি। আর সেই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় এখন তৃণমূলের কাছে বিজেপি বাবু। এমনকী তিনি যে আসন থেকে দাঁড়াবেন সেখানে ছাত্রছাত্রীরাই বিক্ষোভ দেখাবে সেই ইঙ্গিতও দিয়েছেন মমতা। এতদিন কোর্ট রুমের নিরাপদ ঘেরাটোপে থেকে রায় দিতেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। এবার জনতার আদালতে দাঁড়াতে হবে তাঁকে। চারপাশ থেকে ধেয়ে আসবে আক্রমণ। এসব সামলে তিনি এবার কতটা বঞ্চিতদের ভগবান তকমাটি বজায় রাখতে পারেন সেটাই এখন দেখার।
তবে বিজেপিতে যোগ দিয়েই অভিজিৎ বলেন, এখন উদ্দেশ্য়ে হল ২০২৪ থেকে তৃণমূলের বিদায়লগ্নের সূচনা করে দেওয়া।