ঠিকা কর্মীদের ছাঁটাই সংক্রান্ত মামলায় অস্বস্তিতে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম। যে সমস্ত কর্মীদের ছাঁটাই করা হয়েছিল তাদের চাকরি আগামী ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এছাড়া যে বকেয়া রয়েছে তাও মিটিয়ে দিতে হবে। আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এ নিয়ে তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রের পরিবহণ নিগমকে। এরফলে স্বস্তি পেলেন ঠিকা শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন: কর না মিটিয়েই চলছে অনেক নায়ক–নায়িকা, শিল্পপতিদের দামি গাড়ি, বকেয়া ৭০ কোটি
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গ পরিবহণ নিগম ২০১১ সালে ৩৫ জন অস্থায়ী কর্মীকে ছাঁটাই করেছিল। ওই কর্মীরা বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে পরিবহণ নিগমে কাজ করছেন। ৩৫ জন অস্থায়ী কর্মী স্থায়ী কর্মীদের মতোই কাজ করতেন। তার জন্য তাদের পরিচয় পত্র দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, বেতন ছিল খুবই অল্প। এরপর ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। তারপর কর্মীদের আচমকা কাজ থেকে ছাঁটাই করা হয় ২০১২-র ১৬ ফেব্রুয়ারিতে। কাজ হারানোর পরে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অস্থায়ী কর্মীরা। তারা সে ক্ষেত্রে প্রথমে শিল্প ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। প্রায় দু বছর ধরে মামলা চলে। কিন্তু বারবার তলব করা সত্ত্বেও নিগমের কেউ ট্রাইব্যুনালে হাজিরা দেননি। ফলে ২০১৪ সালে কর্মীদের পক্ষে রায় দেয় ট্রাইব্যুনাল। এরপর সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যায় রাজ্য। সে ক্ষেত্রে সিঙ্গেল বেঞ্চ ট্রাইবুন্যালের রায় বহাল রাখে। পরে ডিভিশন বেঞ্চও সেই রায় বহাল রাখে। কিন্তু, সেই হেরে যাওয়ার ২০২ দিন পর সুপ্রিম কোর্টে যায় নিগম। কিন্তু, সুপ্রিম কোর্ট গত অগস্টে সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। আদালত জানিয়ে দিয়েছে, আবেদনের সময় পেরিয়ে গিয়েছে।
এরপর আবার হাইকোর্টে নিগমের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেন অস্থায়ী কর্মীরা। সে ক্ষেত্রে কর্মীদের বকেয়া দিতে রাজি হয়নি নিগম। তবে শেষমেষ আদালত ওই কর্মীদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে বলেছে। মামলাকারীদের হয়ে লড়েছিলেন আইনজীবী বাণীব্রত রায়। নিগমের এক আধিকারিক জানান, আদালতের নির্দেশে পদক্ষেপ করার আগে আইনি পরামর্শ নেওয়া হবে। এই প্রক্রিয়া চলছে। প্রসঙ্গত, ওই অস্থায়ী শ্রমিকদের লড়াইয়ে পাশে ছিল ‘সংগ্রামী শ্রমিক ঐক্য’। সংগঠনের মতে, এই জয় হল ঐতিহাসিক জয়। অন্যদিকে, সর্বোচ্চ আদালতে রাজ্য সরকারের আবেদন করার রাস্তা কার্যত বন্ধ।