কদিন আগেই সোনার দাম রেকর্ড বেড়েছিল। তাতে যাঁদের টাকা আছে তাঁরা বেশি করে সোনার গয়নায় বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছে লোভে পড়া মানুষও। আসলে তারা দুষ্কৃতী। তাই তো সোনার দাম যখন আকাশছোঁয়া তখন তা অর্ধেক দামে দিতে চাওয়ার টোপ ব্যবহার করে দুষ্কৃতীরা। সেই টোপে পা দেন যাঁরা টাকা বিনিয়োগ করতে পারেননি। আসলে এখানেও একটা লোভ কাজ করেছে। যাতে কম দামে সোনা কিনে পরে বেশি দামে বিক্রি করতে পারা যায়। আর অতি লোভেই তাঁতি নষ্ট। ফলে জীবনে নেমে এল ভয়ঙ্কর বিপদ। নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনলেন এক ব্যক্তি।
এদিকে দু’দিন আগেই রেকর্ড দাম চড়েছিল সোনার। সর্বকালের সর্বোচ্চ দাম ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছিল সোনা। এমনকী বিশ্বের বাজারে আউন্স প্রতি দাম ২৩০০ ডলার অতিক্রম করে গিয়েছিল। অর্থাৎ ১০ গ্রাম সোনার দাম পৌঁছে যায় ৭০ হাজার ২৪৮ টাকা। যেখানে ২০২৩ সালেই এই সোনার দাম ছিল ৫৬ হাজার টাকা থেকে ৫৭ হাজার টাকা ১০ গ্রাম সোনার। বিশ্বব্যাপী সোনার বাজারের মূলধন আনুমানিক ছিল ১৫.৫৭ ট্রিলিয়ন ডলার। কিন্তু বিপুল পরিমাণ সোনার দামকে কাজে লাগিয়ে যে যেরকম পেরেছে মুনাফা করতে চেষ্টা করেছে। আর সক্রিয় হয়ে উঠেছে অসাধুরা। সেই টোপে যাঁরা পা দিলেন তাঁদের সর্বনাশ।
আরও পড়ুন: চা–পাতায় কীটনাশক ব্যবহারের অভিযোগ, চাপে পড়ে শুরু সচেতনতা প্রচার
অন্যদিকে এমন আবহে কেউ যদি অর্ধেক দামে খাঁটি সোনা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়, তাহলে মাথাটা ঘুরবে তো বটেই। সঙ্গে থাকবে সেই লোভ। যাতে পা দিয়েই সর্বস্বান্ত হলেন এক ব্যক্তি। পুলিশ সূত্রে খবর, পঞ্চাশ শতাংশ ছাড়ে খাঁটি সোনা মিলবে বলে টোপ দেওয়া হয় দুই ক্রেতাকে। তারপর সেটা দিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পর্যটনকেন্দ্র বকখালিতে ডাকা হয় ওই দুই ক্রেতাকে। ১০০ গ্রাম সোনার বাজার মূল্য ৬ লক্ষ টাকা। সেখানে ৩ লক্ষ টাকা দিলেই মিলবে একই পরিমাণ সোনা। এই টোপ দেওয়া হয়েছিল। আর তাতেই পা দিয়ে ক্যানিং থেকে ৩ লক্ষ টাকা নিয়ে বকখালি পৌঁছন এক ক্রেতা। আর তারপর ঘটে যায় মহাবিপদ।
ব্যাগে করে বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়ে ওই ক্রেতা সংশ্লিষ্ট জায়গায় পৌঁছতেই শুরু হয় অপারেশন। সমুদ্র সৈকতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ৩ লক্ষ টাকা লুট করে নেয় দুই দুষ্কৃতী। খালি হাতে ফিরতে হয় তাঁকে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে স্থানীয় ফ্রেজারগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই ব্যক্তি। প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে বকখালির একটি হোটেল থেকে আগ্নেয়াস্ত্র এবং দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের মধ্যে একজন বকখালিরই বাসিন্দা। পুলিশের কাছে দু’জনই নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেছে। পুলিশ টাকা উদ্ধার করতে বাকিদের খোঁজ করছে। কাকদ্বীপ মহকুমা আদালতে ধৃত দু’জনকে তোলা হলে ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।