Homeসাবধান !! এনারা জন্মেছিলেন...

সাবধান !! এনারা জন্মেছিলেন এইসমাজেই ~ ভারতের কুখ্যাত কিছু সিরিয়াল কিলার…

সিরিয়াল কিলিং বা সিরিয়াল কিলারদের নিয়ে আমাদের আগ্রহের শেষ নেই। তাদের মনস্তত্ত্ব নিয়ে মনোবিজ্ঞানী থেকে শুরু করে অপরাধবিজ্ঞানীদেরও গবেষণার শেষ নেই। সিরিয়াল কিলার বা ধারাবাহিক খুনিদের নিয়ে যুগে যুগে বহু সিনেমা, গল্প, কাহিনীর জন্ম হয়েছে। রহস্যময় সেই সিরিয়াল কিলাররা হয়ত আমাদের আশেপাশেই লুকিয়ে আছে… ঠিক যেমন সুরিন্দর কোলী-পান্ধের ।

আসুন ইতিহাস এর পাতা উল্টে দেখে নেওয়া যাক, দেশের বাছাই করা কিছু সিরিয়াল কিলারদের ঘটনা এবং পন্থা ~

ঠগ বেহরাম

যেই পথ দিয়ে উনি যেতেন সেই পথে মানুষ কি মানুষের আর কোন চিহ্নই অবশিষ্ট থাকত না, যেই এলাকায় যেতেন সেই সেই এলাকা ছেড়ে লোকেরা ওনার ভয়ে পালিয়ে বেড়াত। জানেন কেন !! মানবরূপে উনি ছিলেন এক হিংস্র জানোয়ার। ভারতের ইতিহাসে সর্বকালের নিষ্ঠুর ও ভয়ঙ্কর সিরিয়াল কিলারের উপাধি দেওয়া হয় ঠগ বেহরামকে। উনি হত্যা করে থাকেন ৯৩১ জন মানুষকে
১৭৬৫ থেকে ১৮৪০ শতাব্দী ভারতে তখন ব্রিটিশদের রাজত্ব। ব্রিটিশ পুলিশ তখন দেশে আইন ব্যবস্থা সুদৃঢ় করার প্রচেষ্টায়। অন্যদিকে দিল্লী থেকে গোয়ালিয়র ও জব্বলপুর রাস্তায় চলতে থাকে এই ঠগ বেহরামের ছিনতাই, লুটপাট, খুনের সন্ত্রাস। এই রাস্তা দিয়ে কোন ব্যবসায়ী, জমিদার, কোন তীর্থযাত্রী, কোন সাধুর দল, সাধারণ মানুষজন, বা কোন বধূর পালকি কাউকেই রেহাই দেওয়া হত না, টাকাপয়সা লুটপাটের পর প্রত্যেকের হত্যা করা হত। আর তাঁর হাতিয়ার হত একটি ‘রুমাল’। হ্যাঁ একটি রুমাল দিয়েই গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করা হত সকলকে। একের পর এক পুরো দলকেই সবার চোখের সামনে মারা হত। এইভাবে এক নয়, দুই নয়, দুশো নয়, তিনশোও নয় পুরো নয়শো একত্রিশ লোকের হত্যা করা হয়। করাচী, লাহোর, মাড়বার, কাঠিয়াবাড়, মুর্শিদাবাদ থেকে বড় পরিমাণে ব্যবসায়ীর দল রহস্যময় পরিস্থিতিতে পুরো দল সহ নিখোঁজ হতে থাকে। এমনকি ছুটিতে ঘরমুখো  ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর সেনাবাহিনীর দলও নিখোঁজ হয়ে যায়। ব্রিটিশ পুলিশবাহিনী এর কোন সূত্রই খুজে পাচ্ছিলেন না। প্রায় দুশো জনের দল ছিল এই ঠগ বেহরামের, যার প্রকৃত নাম ছিল বেহরাম জিমেদার। এরা খুবই ধূর্ত, শক্তিশালী ও হিংস্র ছিল। নিজেদের মধ্যে এক ভিন্ন ভাষায় কথা বলতেন, ঠগেদের এই বিশেষ ভাষাকে “রামোসি” বলা হত।
১৮২৮ সালে ব্রিটিশ কোম্পানী  উইলিয়াম স্লিমেন নামে এক অধিকর্তাকে ইংল্যান্ড থেকে ভারতে পাঠান হয় নিখোঁজ ব্যক্তিদের রহস্যভেদ করতে। কিছুদেনের মধ্যেই উনি জানতে পারেন ঠগ বেহরামের ভয়ানক দলের ব্যাপারে। উইলিয়াম সাহেব দিল্লী থেকে গোয়ালিয়র এবং জব্বলপুর অবধি যাতায়তের রাস্তার সব বন জঙ্গলের সাফাই করেন, যাতে কোন ঠগি জঙ্গলে লুকিয়ে থাকতে না পারে। বেশকিছু গুপ্তচরও লাগানো হয়, অনেকের ধারণা ভারতে ইন্টেলিজেন্স ব্যুয়েরর(IB) সুচনা সেই সময় থেকেই হয়। গুপ্তচরের সাহায্যে উইলিয়াম প্রথমে ঠগিদের ভাষা বোঝার প্রচেষ্টা করেন। প্রায় দশ বছর বাদে অনেক পরিশ্রমে  ১৮৩৯সালে ৭৫ বছর বয়সের ঠগ বেহরামকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। ধীরে ধীরে বেহরামের সব সহচরকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তার সাথেই হদিস পাওয়া যায় প্রায় পাঁচ হাজারের মত নরকঙ্কাল বা মৃতদেহের। ঠগ বেহরাম নিজে স্বীকার করেন ৯৩১জন লোকের হত্যার ও ৯৫৬ জনের হত্যার সাক্ষী হতে। ঠগ বেহরাম সহ তাঁর দলের সব কুখ্যাত ঠগিদের জব্বলপুরের এক বৃক্ষে ফাঁসি দেওয়া হয়, আজও নাকি সেই বৃক্ষটি জব্বলপুরে রয়েছে। আর ঠগির দলের নতুন সদস্যদের বন্দি গৃহে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। জব্বলপুরে প্রতি সপ্তাহে হাট বসে, এই হাটে বসা দোকানদাররা  ঠগিদেরই বংশধর যাদের উইলিয়াম স্লিমেন জীবনের মূলধারায় ফিরে আসতে সাহায্য করেন।

মল্লিকা বা সায়নাইড মল্লিকা

মল্লিকা ভারতের প্রথম মহিলা সিরিয়াল কিলার

ব্যঙ্গালুরুর মল্লিকা যার আসল নাম কে ডি কেম্পাম্মা ১৯৯৯ থেকে ২০০৭ এর মধ্যে মোট ছয়জন মহিলাকে খুন করেন। প্রতিটি খুন করা হয় সায়নাইড বিষ দিয়ে, তাই তাকে ‘সায়ানাইড মল্লিকা’ বলা হয়। পরিচারিকা হিসেবে কাজ করার সময় ছোট ছোট চুরি ডাকাতি থেকে অপরাধ জগতে আসেন মল্লিকা, প্রথম খুন করেন ১৯৯৯ সালে। নিজে ভক্ত সেজে ব্যাঙ্গালুরুর  মন্দিরে যেতেন আর নজর রাখতেন অন্যান্য গৃহিণীদের উপর যারা পূজার্চনার জন্য মন্দিরে যেতেন। মল্লিকা ধীরে ধীরে সেই সব মহিলাদের মনের কষ্ট বোঝার ছলে তাদের বিশ্বাস অর্জন করে ফেলত এবং তাদের দুঃখ কষ্ট দূর করার জন্য মন্দিরে বিশেষ যজ্ঞ বা পূজার দেওয়ার পরামর্শ দিতেন।  শহর থেকে কিছুটা দূরে সেইসব পূজার্চনার আয়োজন করা হত। আর সেই পূজার প্রসাদ বা জলের মধ্যে সায়নাইড দ্বারা মহিলাদের হত্যা করতেন। হত্যার পর এদের টাকাপয়সা, গয়না নিয়ে পালিয়ে যেতেন। ১৯শে অক্টোবর ১৯৯৯ সালে মামাথা রাজন নামে মহিলার প্রথম খুন করেন। অন্য এক ৩০ বছর বয়স্কা মহিলা যিনি নিঃসন্তান ছিলেন, মল্লিকার ষষ্ঠ ও শেষ শিকার। ২০০৬ এ মল্লিকাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ২০১০ এ মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয়, যা পরে ২০১২ এ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে রূপান্তরিত হয়।

ডাঃ দেবেন্দ্র শর্মা

ডাক্তারদের আমরা জীবন দাতা বলে থাকি। কিন্তু এই যুগে একজন ডাক্তারও সিরিয়াল কিলার হতে পারেন।
ডাঃ দেবেন্দ্র শর্মা পেশায় একজন আয়ুর্বেদিক ডাক্তার কিন্তু প্রায় ৪০ টি খুন করেছেন। ২০০২ থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে উনি উত্তর প্রদেশ, দিল্লী, হরিয়ানা এবং রাজস্থান জুড়ে বেশ কয়েকজন ট্যাক্সি ড্রাইভারকে খুন করেন। ওনার নিশানা ছিল নিরীহ ট্যাক্সি ড্রাইভাররা। যাত্রী রূপে তিনি ট্যাক্সিতে বসতেন, কিছুদূর চলার পর যেকোনো অছিলায় ট্যাক্সি দাঁড় করিয়ে অন্য সাথীদের এনে ড্রাইভারের খুন করতেন। মূলতঃ লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুন করা হত। পরে সেই ট্যাক্সি চোর বাজারে বিক্রি করে দিতেন। ৯ই ফ্রেব্রুয়ারি ২০০৪ সালে দেবেন্দ্র শর্মাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৩ই মার্চ, ২০০৭ এ আজীবন কারাদন্ডের শাস্তি দেওয়া হয়, তবে পরবর্তীতে শর্মাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।

রেনুকা সিন্ধে ও সীমা গবিত

রেনুকা সিন্ধে ও সীমা গবিত ১৯০০ সাল থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে কুড়িটির ও বেশি শিশুর অপহরণ ও মোট দশটি শিশুর হত্যা করে…

মহারাষ্ট্রের রেনুকা সিন্ধে ও সীমা গবিত, দুইবোন ভারতের প্রথম মহিলা দোষী যাদের সুপ্রিম কোর্ট মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। মা অঞ্জনার সাথে রেনুকা ও সীমা দুইবোন প্রায় তেরোটি শিশুর অপহরণ ও দশটি শিশুর হত্যা করে। এরা শিশুদের অপহরণ করে তাদেরকে নিয়ে ভিড় বহুল এলাকায় যেত ও লোকেদের পকেট, ব্যাগ, চেইন ইত্যাদি ছিনতাই করত, যদি কোন কারনে ধরা পরে যায় তো বাচ্চা দেখিয়ে সহানুভূতি অর্জন করে সঙ্গীর পালানোর জন্য রাস্তা করে দিত। তাদের মা অঞ্জনা একবার সন্তোষ নামের একটি শিশুর অপহরণ করে, মেয়ে সীমা যখন পার্স ছিনতাইে ধরা পরে লোকেদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য অঞ্জনা শিশুটির মাথা একটি বৈদ্যুতিক পিলারে খুব জোরে আঘাত করে, রক্তাক্ত শিশুটির এমন ভয়াবহ দৃশ্য যথেষ্ট ছিল সীমার গঠনা স্থল থেকে পালানোর। পরে এই সন্তোষ নামের শিশুটির মৃতদেহকে এক রিকশ স্ট্যান্ডে ফেলে দেওয়া হয়। এইভাবেই এরা শিশুদের অপহরণ করত ও কাজ শেষের পর এদের হত্যা করে ফেলত। পুনে, থানে, কল্যাণ, কোলাহপুর, নাসিক সবজায়গায় এরা বছরের পর বছর শিশু অপহরণ ও হত্যার ভয়াবহ ক্রিয়াকলাপ চালাতে থাকে। এতে জনসাধারণের মনে এত সন্ত্রাস সৃষ্টি করে দেয় যে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতেও মা বাবারা ভয় পেতেন। অবশেষে ১৯৯৬ সালে নাসিকে ক্রান্তি নামের এক নয় মাসের শিশুর অপহরণে এরা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। মা অঞ্জনা সহ দুই মেয়ে রেনুকা ও সীমাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে , গ্রেপ্তারের দুই বছর বাদে ১৯৯৮ সালে মা অঞ্জনার  মৃত্যু হয় । ২৯শে জুন ২০০১ সালে শেশান কোর্ট রেনুকা ও সীমাকে তেরো জন শিশুর অপহরণ ও ছয় শিশুর হত্যার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে ও মৃত্যু দণ্ডে দণ্ডিত করেন। ৩১ শে আগস্ট ২০০৬ সালে সুপ্রিম কোর্ট এদের মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি অব্যাহত রাখেন। ১৪ই আগস্ট ২০১৪ সালে রাষ্ট্রপতি প্রনব মুখারজ্জি সুপ্রিম কোর্টের মৃত্যুদণ্ডের শাস্তিকে অব্যাহত রেখে ফাঁসির আবেদনকে নাকচ করেন।

মোহন কুমার বা সায়নাইড মোহন

প্রফেসর মোহন কুমার কুঁড়ি জন মহিলার হত্যা করেন গর্ভ নিরোধক পিলের ছলে সায়নাইড পিল দ্বারা…
মোহন কুমার মাঙ্গালুরুর এক গ্রামের ‘শ্রিরাডি প্রাইমারী’ স্কুলে ইংলিশ, বিজ্ঞান ও গণিত এর শিক্ষক ছিলেন। উনি মহিলাদের সাথে বিশেষ করে যারা বিয়েতে পণ দিতে অক্ষম হতেন বা সঠিক পাত্রের খোঁজে থাকতেন তাদের সাথে ছলনা কৌশলে আলাপ পরিচয় বাড়াতেন ও বিয়ের প্রস্তাব দিতেন এবং এদের প্রত্যেকের সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়তেন। যার পরে উনি মহিলাদের গর্ভ নিরোধক ঔষধের বাহানায় সায়নাইডের পিল দিয়ে হত্যা করতেন।
২০০৩ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে দক্ষিণ কর্ণাটকের পাঁচটি জেলার মধ্যে উনি মোট কুড়ি জন মহিলাকে এইভাবে সায়নাইড  দ্বারা হত্যা করেন। মহিলাদের প্রত্যেকের বয়স ছিল কুড়ি থেকে ত্রিশ বছর। আর এদের মৃত দেহ পাওয়া যেত বাসস্ট্যান্ডের বিশ্রামাগারে। মহিলারা প্রত্যেকের পরিধানে থাকত বিবাহের শাড়ি, কিন্তু গয়না বা অলঙ্কার কিছুই থাকত না। এইভাবে মোহন কুমার একের পর এক মহিলাদের হত্যা করতে থাকেন কিন্তু প্রায় ছয় বছর ধরে পুলিশের কাছে এই রহস্যময় খুনির চেহারার কোন হদিশ ছিল না। দশটি পুলিশ থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যু ও আত্মহত্যার কেস ফাইল হয়। ফরেনসিক পরীক্ষায় প্রত্যেকের রক্তে সায়নাইড পাওয়া যায়, এটা এমনই একটা রসায়ন যা সহজে পাওয়া যায় না বা আত্মহত্যার কাজে সাধারনভাবে ব্যবহৃত হয় না, তা সত্ত্বেও অবশেষে এইসব খুনের সুত্র পাওয়া যায় মোহন কুমারের কুড়িতম শিকার বাইশ বছরের অনিতা বারিমার নিখোঁজ হওয়ার গঠনা থেকে। অনিতা বারিমারের ফোন রেকর্ড থেকে জানা যায় রোজ রাতে একটি নির্দিষ্ট নাম্বার থেকে ফোন আসত, আর সেই নাম্বারটি ছিল কাবেরি নামে এক মহিলার, পুলিশ খুবই বিস্মিত হয়ে পরে যখন জানতে পারে এই কাবেরি মহিলাটিও নিখোঁজ হয়েছিলেন এবং পরে এর মৃতদেহ পাওয়া যায়। একইভাবে কাবেরির ফোন রেকর্ড থেকে বেরিয়ে আসে অন্য আরেকটি ফোন নাম্বার, আর সেই নাম্বারটিও ছিল খুন হয়ে যাওয়া এক মহিলার। এইভাবে একের পর এক সমস্ত মহিলাদের কল রেকর্ড যাচাই এর পর দেখা যায় সবকটি নাম্বার ব্যাবহার করা ম্যাঙ্গালুরুর একটি গ্রাম ‘ডেরালাকাটে’ থেকে। ধরা পরেন মোহন কুমার। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে যা সামনে আসে তা পুলিশের কাছে ছিল কল্পনার বাইরে। মোহন কুমার জানান এইভাবে তিনি মোট বত্রিশ জন মহিলার হত্যা করেন। মহিলাদের বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রাত্রি কাটাতেন, পরে এদেরকে বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে গর্ভ নিরোধক ওষুধের ছলনায় সায়নাইড দিয়ে হত্যা করে এদের অলঙ্কার নিয়ে পালাতেন। ২২শে সেপ্টেম্বর ২০১৬ তে ম্যাঙ্গালুরুর কোর্টে মোহন কুমারকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। আদালতে সকলের সামনে মোহন কুমারের বলেছিলেন, “প্রতি বার যখন কোন মহিলার মৃত্যু হত আমি খুবই দুঃখিত হতাম, কিন্তু সেটা শুধুমাত্র পনেরো কুড়ি দিন অবধি বজায় থাকত, অন্য নতুন সঙ্গীকে পাওয়া মাত্র আমি পূর্বের অতীত সব ভুলে যেতাম।।”

নীঠারি হত্যাকাণ্ড

২০০৬ সালে উত্তরপ্রদেশের নয়ডা শহরে হওয়া নীঠারি হত্যাকাণ্ডে পুরো দেশ কেঁপে উঠেছিল।
নয়ডার হাউস নাম্বার ১০ এ মালিক মনিন্দর সিং পন্ধেরের সাথে থাকত তাঁর কর্মচারী বা কাজের লোক ৩৯ বছরের সুরিন্দর কোলী। সন্ধ্যার পর অন্ধকার নামা মাত্রই বাড়ীর গেইটে দাঁড়িয়ে সেই রাস্তা দিয়ে যাওয়া মেয়েদের মুখ চাপা দিয়ে বাড়ীর ভিতরে নিয়ে এদের সাথে যৌন নির্যাতনকরত, এরপর খুন করে ফেলত এদের প্রত্যেককে। শুধু তাই নয় নারকো টেস্টে কোলী তার কিছু পাশবিক অপরাধের কথা স্বীকার করে, খুন করার পর মৃত দেহকে বির্বস্ত্র করে সেই মৃত দেহের সাথে যৌন শোষণ করে থাকত সে। কখনো আবার মৃত দেহকে টুকরো করে সেই নর মাংস ভক্ষণ করত। ২০০৬ সালে কোলীর এই জঘন্য অপরাধ তখন সামনে আসে যখন রিম্পা হালদার ও পিঙ্কি সরকার নামে  বছর কুড়ির দুই যুবতীর নিখোঁজ হওয়ার তদন্ত নয়ডা পুলিশের থাতে আসে। ২৯শে ডিসেম্বর ২০০৬ এ পন্ধেরের বাংলোর পিছনে কিছু নর কঙ্কাল পাওয়া যায়। জায়গাটি খুঁড়ে রিম্পা ও পিঙ্কি সহ মোট পনেরোটি বাচ্চার কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। বাংলোর মালিক পন্ধের ও কোলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলা সি বি আই কে দেওয়া হয়। ১০ই এপ্রিল ২০০৭ এ সি বি আই কোলী ও বাড়ীর মালিক পন্ধেরের বিরুদ্ধে  রিম্পা ও পিঙ্কি র ধর্ষণ ও হত্যার চার্জশীট দেয়। ১২ই ফ্রেব্রুয়ারি ২০০৮ এ নিম্ন আদালত কোলী ও পন্ধের কে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে। ১১ই সেপ্টেম্বর এলাহাবাদ হাইকোর্ট বাংলোর মালিক পন্ধেরকে ক্লিন চিট দিয়ে দেয় এবং ৭ই জানুয়ারি ২০১০ এ সুপ্রিম কোর্ট কোলীর মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি অব্যাহত রাখে।

গত ২৪শে জুলাই ২০১৭ গাজিয়াবাদের সি বি আই কোর্টের স্পেশাল জর্জ পবন কুমার তিবারি এই কেইস কে ‘rarest of rare’ আখ্যান দিয়ে মনিন্দর সিং পন্ধের ও সুরিন্দর কোল ীকে ফাঁসির শাস্তি দেন।

- A word from our sponsors -

spot_img

Most Popular

আরও খবর...

বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ: অসমের মুখ্যমন্ত্রীর দাবি নিয়ে উঠছে প্রশ্ন, এত দিন ক্ষমতায় থেকে তিনি কী করলেন

ডেস্ক: ঝাড়খণ্ডে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব...

- A word from our sponsors -

spot_img

সব খবর...

CBI Raid: লোকসভা ভোটের মধ্যেই কাঁথিতে ২ তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে কাকভোরে পৌঁছল সিবিআই

লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার তদন্তে পূর্ব মেদিনীপুরে ২ তৃণমূল নেতার বাড়িতে হানা দিল সিবিআই। শুক্রবার কাকভোরে মারিশদা থানা এলাকার ২ তৃণমূল নেতার বাড়িতে পৌঁছে যান সিবিআই আধিকারিকরা তবে ২ জনের কারও দেখাই পাননি তাঁরা।আরও পড়ুন: শ্রমিকের কাজ করতে মুসলমানরা যখন BJPশাসিত...

BITM: মেট্রো রেলের বিবর্তনের ইতিহাস নিয়ে গ্যালারি এবার বিড়লা মিউজিয়ামে, কবে চালু ?

ড়কলকাতার লাইফ লাইন হিসাবে পরিচিত মেট্রো রেল। এখন তা হাওড়া জেলার সঙ্গে কলকাতার সংযোগকারী অন্যতম পরিবহণ মাধ্যমও বটে। সেই মেট্রো রেলে কী ভাবে শহরের বুকে ছড়িয়ে পড়ল, কেমন করেই বা সে গঙ্গার নিচ দিয়ে চলাচল করে, এ সব তথ্য এবার জানা যাবে বিড়লা শিল্প...

Shahjahan Sheikh case update: এবার ১৪ কোটি বাজেয়াপ্ত ED-র,শাহজাহানের ঘাঁটিতে অস্থায়ী ক্যাম্প, অভিযোগ শুনবে CBI

তহবিল তছরুপ প্রতিরোধ আইন বা পিএমএলএ-তে এর আগে ১২ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি । এবার ১৪ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করল তদন্তকারী সংস্থা। এর মধ্যে টাকা এবং সম্পত্তিও রয়েছে। এরই মধ্যে আবার শাহজাহান ও তার বাহিনীর জমি দখল সংক্রান্ত অভিযোগ শুনতে সন্দেশখালিতে অস্থায়ী...

বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ: অসমের মুখ্যমন্ত্রীর দাবি নিয়ে উঠছে প্রশ্ন, এত দিন ক্ষমতায় থেকে তিনি কী করলেন

ডেস্ক: ঝাড়খণ্ডে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, গত ৪০ বছরে অসমে সোয়া কোটি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ করেছে। হিমন্তের এই বক্তব্যকে ঘিরে তাঁর রাজ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রশ্ন উঠছে, এই প্রবণতা রুখতে তাঁর সরকার কী করল। অসমে তিন দফার ভোট শেষ হয়েছে ৭...

Fact Check: ‘তৃণমূল কর্মী ও কুকুরের প্রবেশ নিষেধ’, সত্যিই কি এমন আছে বাড়িতে? জানুন সত্যিটা

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ছবি পোস্ট করে নেটিজেনদের অনেকে দাবি করেন, ওই ছবিতে একটি বাড়ির গেটে থাকা ব্যানারে তৃণমূল (TMC) কর্মীদের কুকুরের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে এবং তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে।বুম দেখে ব্যানারের লেখাটি ডিজিটাল উপায়ে সম্পাদনা করে বদলে ফেলা হয়েছে।...

জুলাইয়ের মধ্যে প্রথম এলসিএ মার্ক-১এ যুদ্ধবিমান পাবে ভারতীয় বায়ুসেনা, আরও অর্ডার পাচ্ছে হ্যাল

নয়াদিল্লি: ভারতীয় বায়ুসেনা এই বছরের জুলাইয়ের মধ্যে দেশের প্রথম এলসিএ মার্ক ১এ যুদ্ধবিমান পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে ভারতীয় বায়ুসেনার কাছে এই বিমানটি হস্তান্তরের আশা করা হয়েছিল, কিন্তু প্রযুক্তিগত কারণে এটি কিছুটা বিলম্বিত হয়ে যায়। জুলাইয়ের মধ্যে হস্তান্তরের আশা ভারতীয় বায়ুসেনা এবং পাবলিক সেক্টর...

মুম্বই হোর্ডিং বিপর্যয়: অবৈধ বিলবোর্ডের মালিক উদয়পুরে গ্রেফতার

ডেস্ক: মুম্বইয়ের অবৈধ বিলবোর্ডের মালিক ভবেশ ভিড়ে ধরা পড়লেন। তাঁরই কোম্পানি ইগো মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের বিশাল অবৈধ বিলবোর্ড ভেঙে পড়ে মুম্বইয়ের প্রাণ হারান ১৬ জন। মুম্বই পুলিশের অপরাধ দমন শাখা বৃহস্পতিবার উদয়পুরে ভবেশ ভিড়েকে গ্রেফতার করে। তাঁকে মুম্বই নিয়ে আসা হচ্ছে। গত সোমবার প্রবল ঝড়ে ঘাটকোপারে...

Adhir Chowdhury meets Mukul Roy: দাদা কেমন আছেন? মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করলেন অধীর চৌধুরী

মুকুল রায়কে দেখতে কাঁচরাপাড়ার বাড়িতে হাজির কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। বৃহস্পতিবার অধীর চৌধুরী গিয়েছিলেন ব্যারাকপুরের সিপিএম প্রার্থী দেবদূত ঘোষের প্রচারে। আর সেখানে এসে একবার কাঁচরাপাড়ায় মুকুল রায়ের বাড়িতে ঘুরে গেলেন অধীর। তবে সূত্রের খবর এদিন এটা ছিল নেহাতই বর্ষীয়ান নেতার শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নেওয়ার জন্য...

Israel vs Palestine conflict: ফিলিস্তিন পাবে বড় মর্যাদা, স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনে তৎপর আরব বিশ্ব! ইসরায়েলের সর্বনাশ

  Israel vs Palestine conflict: ফিলিস্তিনের ভাগ্য ফিরতে হয়ত আর বেশি দেরি নেই। আরব দেশগুলো জোট বাঁধছে ফিলিস্তিনের হয়ে। গাজা ইস্যুকে কেন্দ্র করে ইসরায়েল হারাতে চলেছে বড় সাপোর্ট। একদিকে গাজায় যেমন ফিলিস্তিনিরা তাদের সর্বস্ব হারাচ্ছে, আবার ঘুরপথে এই গাজাই ফিলিস্তিনকে এনে দিতে পারে স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা। কথাটা...

Malda News: খুব সাবধান! বাজ পড়ে ১১জনের মৃত্যু, ভয়াবহ কাণ্ড মালদায়, ঘরে ঘরে কান্নার রোল!

একজন দুজন নয়, একেবারে ১১জনের মৃত্যু বজ্রপাতে। মালদায় একেবারে মর্মান্তিক ঘটনা। একের পর এক ব্যক্তির মৃত্যু বজ্রাঘাতে।  বৃহস্পতিবার দুপুরে আচমকাই ঝড় বৃষ্টি শুরু হয় মালদায়। এদিকে মালদা মানেই আমের জেলা। আর ঝড় বৃষ্টি মানেই আম পড়ে টপাটপ।সেই ঝড় বৃষ্টির মধ্য়েই আম কুড়োতে গিয়েছিল কয়েকজন। কিন্তু...

Narendrapur Ramakrishna Mission in HS: স্ক্রুটিনির পরে উচ্চমাধ্যমিকের মেধাতালিকায় নরেন্দ্রপুরের আরও ৪ জন, সবমিলিয়ে ১০!

এমনিতেই দুর্দান্ত রেজাল্ট হয়েছিল। স্ক্রুটিনির রেজাল্টের পরে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার মেধাতালিকায় জায়গা করে নিলেন নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের আরও চারজন পড়ুয়া। প্রাথমিকভাবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার মেধাতালিকায় ছয়জন ছিলেন। স্ক্রুনিটির পরে মেধাতালিকায় মোট ১০ জন জায়গা করে নিলেন। একজন দ্বিতীয় হয়েছেন। ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছেন একজন। অষ্টম স্থানে...

Matua infighting: শান্তনুর বিরুদ্ধে অনশনে অসুস্থ মমতাবালার মেয়ে, শুনছেন না ডাক্তারদের কথা

বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে পৈতৃক ভিটেবাড়ি থেকে অন্যায়ভাবে উচ্ছেদ করার অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। এরপরেই ভিটে বাড়ি ফেরত পেতে সোমবার সকাল থেকে শান্তনুর বিরুদ্ধে প্রয়াত বীণাপাণি দেবীর ঘরের বাইরে অনির্দিষ্টকালের জন্য আমরণ অনশন শুরু করেছেন মমতাবালা ঠাকুরের মেয়ে মধুপর্ণা...