রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে রাজ্য সরকারের এখন সংঘাত চলছে। তার মধ্যে আবার উঠেছে নজরদারির অভিযোগ। তাই রাজভবনে এখন আধা সেনা মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই আবহে বাংলার বকেয়া না দিয়ে কেন্দ্রের বঞ্চনা করার প্রতিবাদে রাজধানীতে তৃণমূল কংগ্রেস আন্দোলন করতে চলেছে ১ অক্টোবর। ২ অক্টোবর গান্ধীজয়ন্তীতে রাজঘাটে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব শ্রদ্ধা জানাবেন। আর কলকাতার গান্ধীমূর্তিতেও চলবে অবস্থান–বিক্ষোভ কর্মসূচি। সেদিন সেখানে শ্রদ্ধা জানাতে আসবেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের মুখোমুখি হলেও আগ বাড়িয়ে বাড়তি কথা না বলার নির্দেশ দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব বলে সূত্রের খবর।
এদিকে রাজ্যপালের একতরফা নীতির সমালোচনা করে আসছেন রাজ্য সরকারের মন্ত্রীরা। প্রত্যেকবার গান্ধী জয়ন্তীতে কলকাতার গান্ধীমূর্তিতে শ্রদ্ধা জানান তৃণমূল নেতৃত্ব। এবার তৃণমূল কংগ্রেস বাংলার ১০০ দিনের কাজের টাকা বকেয়া আদায়ের দাবিতে জনতার স্বার্থে কর্মসূচি নিয়েছে নয়াদিল্লিতে। গোটা পরিকল্পনা করেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর কলকাতার কর্মসূচি পালন করা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়। সেখানেই উঠে আসে রাজ্যপালের প্রসঙ্গ। রাজ্যপাল সেদিন ব্যারাকপুরের গান্ধীঘাটে যাবেন। সেখান থেকে ফিরে ময়দানে গান্ধীমূর্তিতে শ্রদ্ধা জানাবেন তারপরের গন্তব্য রাজভবন।
অন্যদিকে ময়দানে তখন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মসূচি চলবে। এবার এই কর্মসূচির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্য সহ–সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারকে। সুতরাং ময়দানে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে রাজ্যপালের মুখোমুখি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকছেই। এই বিষয়ে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘সম্ভাবনা বাস্তবে পরিণত হলেও দলীয় নেতৃত্ব আমাদের নির্দেশ দিয়েছে কোনওভাবেই তাঁর সঙ্গে আগ বাড়িয়ে কথা বলা যাবে না। কোনও সৌজন্য দেখানোর প্রয়োজন নেই। রাজ্যপাল যদি নিজে থেকে সৌজন্য দেখান তখন পরিস্থিতি অনুযায়ী বিচার করা হবে। কিন্তু কেউ নিজে থেকে রাজ্যপালের সঙ্গে বাড়তি কথা বলতে যাবেন না।’
আরও পড়ুন: হাওড়া–এনজেপি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস একঘণ্টা দেরিতে ছাড়বে, শুক্রবারের সূচি জানাল রেল
আর কী জানা যাচ্ছে? ইতিমধ্যেই সার্চ কমিটি নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সংঘাত চরমে উঠেছে। সেখানে আগ বাড়িয়ে বাড়তি সৌজন্যের প্রয়োজন নেই বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তাও একতরফাভাবে এটা ভাল চোখে দেখছে না নবান্ন। তাই রাজ্যপালকে দেখে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে দলীয় নেতাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, নয়াদিল্লিতে মানুষের কাজের টাকা আদায় করার জন্য যখন আন্দোলন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে তখনই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইডি তলব করেছে। এটাও একটা ক্ষোভের কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।