চীনের রহস্যময় গুপ্তচর জাহাজ কী নিয়ে ঢুকে পড়ল ভারত মহাসাগরে? শ্রীলঙ্কা ভারতের সঙ্গে ডুয়্যাল গেম খেলছে না তো? সাগরে ঝড় তুলবে শি ইয়ান ৬, ভারতের অ্যাকশন ফেস করার ক্ষমতা আছে তো? সবে তো ট্রেলার দেখালেন জয়শঙ্কর। ভারতের নিরাপত্তায় এবার কোন ব্রহ্মাস্ত্র ফেলবে নয়া দিল্লি? চীনের স্পাই জাহাজ ভারত মহাসাগরে ঢুকে পড়েছে, রীতিমতো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আর শ্রীলঙ্কা সবটা জেনেও চুপচাপ বসে দেখছে? ভারত কিন্তু ছেড়ে কথা বলবে না, অলরেডি সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর। ঠিক কী ঘটেছে? ভারতের টেনশন বাড়িয়ে চেন্নাই উপকূল থেকে মাত্র ৫০০ কিলোমিটার দূরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় রয়েছে চীনের ওই স্পাই জাহাজ ‘শি ইয়ান ৬’।
না এখানেই শেষ নয় চীনের ওই গুপ্তচর জাহাজ শ্রীলঙ্কার জলসীমায় অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে কলোম্বর ‘ন্যাশনাল অ্যাকোয়াটিক রিসোর্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি’র সঙ্গে যৌথ মহড়ায় অংশ নেবে। নভেম্বরের গোড়া পর্যন্ত ওই মহড়া চলার কথা। কিন্তু হিসেব বলছে স্বার্থ ছাড়া এক পা নড়ে না চীন, তাই সামরিক মহড়া একটা অজুহাত মাত্র। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, ভারতের বিভিন্ন সেনসিটিভ বিষয়ের পাশাপাশি ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির উপর নজরদারি চালাতেই বার বার শ্রীলঙ্কা নৌসেনার পোতাশ্রয়ে আসছে চীনা জাহাজগুলো তাহলে কী শ্রীলংকার অনুমতি নিয়েই চীনের গুপ্তচর জাহাজ ভারত মহাসাগরে ঢুকে পড়েছে? কিন্তু নয়াদিল্লি শ্রীলঙ্কাকে বারংবার জানিয়ে আসছে যে ভারত মহাসাগরে আধিপত্য বিস্তার করতে শি এর দেশ চীন মরিয়া হয়ে উঠেছে তা সত্ত্বেও চীনের স্পাই জাহাজ ভারত মহাসাগরে ঢুকে পড়ল।
যদিও এখনও পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের সরকার আনুষ্ঠানিক অনুমতি দেয়নি বলেই খবর। তারপরেও স্পর্ধা দেখিয়েছে বেইজিং। আর তাতেই চাপ বাড়ছে শ্রীলঙ্কার। কারণ, অলরেডি শ্রীলঙ্কার জলসীমায় চীনা গুপ্তচর জাহাজের উপস্থিতি নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এ বিষয়ে বিক্রমসিঙ্ঘের সঙ্গে কথা বলেছেন।জয়শঙ্কর বুঝিয়ে দিয়েছেন ‘‘ভারতের নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশ্ন এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। যেটা নয়াদিল্লির জন্য খুব ইম্পরট্যান্ট এখনও অবধি শব্দ খরচ করে নিজেদের স্ট্যান্ড পয়েন্ট বুঝিয়ে দিচ্ছে ভারত, কিন্তু পরিস্থিতি বেগতিক বুঝলে একশন নিতে এতটুকু দ্বিধা করবেন না নয়া দিল্লি, এটা খুব স্পষ্ট। মনে করিয়ে দিই, গত বছর ১৬ই আগস্ট চীনের স্যাটেলাইট ও মিসাইল নজরদারি জাহাজ ‘ইউয়ান ওয়াং ৫’ শ্রীলঙ্কার বন্দরে ভিড়েছিল।
ভারতের আশঙ্কা ছিল, চীন ওই জাহাজের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন সেনসিটিভ ইনফরমেশন, এমনকি স্যাটেলাইটের অবস্থান ও জেনে যেতে পারে। সেই সময় এই নিয়ে ভারতের তরফে ওয়ার্ন করা হয়। যদিও চীন আশ্বস্ত করে জানিয়েছিল তেমন কোন উদ্দেশ্য তাদের নেই। কিন্তু চীনের পক্ষে কিছুই অসম্ভব নয় এটা তো ফ্যাক্ট। তাছাড়া ভারতের কাছে যে বিষয়টি আরও উদ্বেগের, সেটা হল শ্রীলঙ্কার তরফে চীনকে সঙ্গে রাখার বাধ্যবাধকতা কারণ, চীনা ঋণে জর্জরিত দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। আবার কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের জমানায় শ্রীলঙ্কা, চীন ঘেঁষা অবস্থান কিছুটা হলেও বদলেছে। তাহলে কী, কলোম্ব দুদিক ব্যালেন্স করতে চাইছে? সেক্ষেত্রে ভারত কিভাবে পুরো বিষয়টাকে দেখবে? চীনকে শায়েস্তা করতে কী অ্যাকশন নেবে নয়াদিল্লি সেটাই দেখার।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়