করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আফ্রিকার জন্য আরও ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে বলেই অনুমান করছে বিশেষজ্ঞ মহল। আফ্রিকাতে হু-র রিজিওনাল ডিরেক্টর মাতশিদিসো মোয়েতি-র আশঙ্কা, আগামী ছ’মাসে সেখানে এক কোটি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারে। দারিদ্রের কারণে এ দেশ প্রযুক্তি ও চিকিত্সা ব্যবস্থা- এই দুই ক্ষেত্রেই বেশ পিছিয়ে। তার উপরে গরিব মানুষের ঘন বসবাস বলেই, লকডাউন করে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এই মহামারী আক্রমণ রুখে দেওয়া কার্যত অসম্ভব এ দেশে। কারণ মানুষকে প্রয়োজনে কাজের তাগিদে বের হতেই হবে। তাই এই ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে সেখানকার বিশেষজ্ঞরা যথেষ্ট চিন্তিত।
যদিও গত মাসের গোড়ার দিকেও তেমন করে সে দেশে থাবা বসায়নি করোনা। তখনই পূর্ব আফ্রিকায় প্রথম করোনা আক্রান্তের খবর জানা গেছিল প্রথম। ৫০ বছরের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তবে তিনি বিদেশি পর্যটক ছিলেন। দ্বিতীয় আক্রান্ত ইথিওপিয়ার এক জাপানি পর্যটক। খুব বেশি ভাইরাস সংক্রমণের খবর সেভাবে পাওয়া যায়নি।সামান্য সর্দি-কাশির উপসর্গ দেখা গিলেও স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইনে চলে যেতেন। তাই স্থানীয়দের মধ্যে রোগের সংক্রমণ সেভাবে ছড়ায়নি।
কিন্তু ছবিটা পাল্টে যায় দ্রুত। হু হু করে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। বাড়ে মৃত্যুও। অল্প সময়ে শুরু হয়ে যায় বিভিন্ন এলাকায় ঘন-সংক্রমণ। ইতিমধ্যেই সে মহাদেশের প্রায় ১৭ হাজারের বেশি করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। মারা গেছেন প্রায় হাজার জন। আফ্রিকান সেন্টার ফর প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল ডিরেক্টর ড. জন কেঙ্গাসন সন্দেহ করেছেন, এই আক্রান্তের সংখ্যা আগামী ছ’মাসে দ্রুত বেড়ে যেতে পারে, এমনকি প্রায় এক কোটি মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন। লন্ডনের ইমপেরিয়াল কলেজের একটি গবেষণাও বলছে, সবরকম সর্তকতা অবলম্বনের পরেও সে মহাদেশে প্রায় তিন লক্ষ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা আছে এই মহামারীতে।
এই অবস্থায় চিন্তা বাড়িয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণা, যেখানে তিনি জানিয়েছেন হু-কে সমস্ত রকম ফান্ড দেওয়া বন্ধ করবেন। এটা সত্যি হলে আফ্রিকার ক্ষেত্রে শুধু করোনার বিরুদ্ধে নয়, পোলিও, ম্যালেরিয়া, এইডস ইত্যাদি বিভিন্ন মহামারীর বিরুদ্ধেই লড়াই করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করেছেন আফ্রিকার হু প্রতিনিধি। আফ্রিকায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আপত্কালীন পরিষেবা বিভাগের প্রধান অবশ্য জানিয়েছেন, আশঙ্কার সংখ্যাগুলি প্রাথমিক ধারণা মাত্র, বাস্তবে এর বদল ঘটতে পারে।সে জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত সর্তকতা নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও জানান, এর আগেও ইবোলার আক্রমণকে তাঁরা রুখতে পেরেছিলেন একটা স্তরে পৈঁছনোর পরে, এবারেও সেভাবেই লড়াই চালিয়ে যেতে তাঁরা বদ্ধপরিকর