একদিকে সিঙুরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিজেপি কর্মীরা। রবিবার দলের দ্বিতীয় প্রার্থীতালিকা প্রকাশিত হলে দেখা যায়, সিঙুরে প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে প্রার্থী করে দল। এর পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিজেপি নেতাকর্মীদের একাংশ। পথ অবরোধ শুরু করেন তাঁরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে আসতে হয় পুলিশকে।
অন্যদিকে, প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষের জের৷ এবার হেস্টিংসে বিজেপি-র নির্বাচনী কার্যালয়ের সামনেই বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি কর্মীরা৷ স্লোগান উঠল মুকুল রায়- রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের বিরুদ্ধে৷ উঠল প্রার্থী বদলের দাবি৷
এ দিন হেস্টিংসে বিজেপি দফতরে মূলত দু’টি বিধানসভার সমর্থকরা বেশি সংখ্যায় ভিড় করেন৷ সেগুলি হল হাওড়ার পাঁচলা এবং উদয়নারায়ণপুর৷ উদয়নারায়ণপুরের সুমিত রঞ্জন কারারকে প্রার্থী করেছে বিজেপি৷ তাঁর বদলে ভোলা সামুইকে প্রার্থী করার দাবি তুলেছেন বিজেপি সমর্থকরা৷ আর পাঁচলায় মোহিত ঘন্টির বদলে রঞ্জন পালকে প্রার্থী করার দাবি জানিয়েছেন ওই বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি কর্মীদের একাংশ৷ রঞ্জন পাল হাওড়া গ্রামীণের বিজেপি সভাপতিও৷
হেস্টিংস অফিসের সামনে বিজেপি সমর্থকরা অভিযোগ তোলেন, বিজেপি-র প্রার্থী নির্বাচনে দুর্নীতি হয়েছে৷ অর্থের বিনিময়ে প্রার্থীপদ দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে৷ সেই সময়ই মুকুল রায় এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হন বিজেপি কর্মীরা৷ মুকুল রায় হেস্টিংস অফিসে ঢোকার সময়ও তাঁর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা৷ যদিও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন সেখানে ছিলেন না৷ হাওড়ার ডোমজুড় কেন্দ্র থেকেই বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন রাজীব৷
শুধু হাওড়া নয়, রাজ্য জুড়েই বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি-র প্রার্থী তালিকা নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের অসন্তোষের ঘটনা সামনে এসেছে৷ হুগলির উত্তরপাড়ায় বিজেপি প্রার্থী প্রবীর ঘোষালের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রচারও শুরু করে দিয়েছেন দলেরই নেত্রী কৃষ্ণা ভট্টাচার্য৷ প্রার্থী বদলে দাবি নিয়ে অবশ্য এখনও কিছু মন্তব্য করেনি বিজেপি নেতৃত্ব৷ দক্ষিণে বিজেপির টিকিট পেয়েছেন তৃণমূল ছেড়ে পদ্মে নাম লেখানো দুই নেতা। ডায়মন্ড হারবারে দীপক হালদার। রায়দিঘিতে শান্তনু বাপুলি। দু’জায়গাতেই প্রার্থীকে মেনে নিতে পারেননি দলের কর্মীদের একাংশ। তা নিয়ে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা।
প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার পরই দেওয়াল লিখন শুরু করে দিয়েছেন দীপক হালদারের লোকজন। কিন্তু দীপককে প্রার্থী হিসেবে মেনে নিতে পারেননি বিজেপির ডায়মন্ড হারবার সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি দেবাংশু পান্ডার অনুগামীরা৷ এদিন সন্ধেয় দীপক হালদারকে সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে ডায়মন্ড হারবার পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন কর্মীদের একাংশ। রাস্তার উপরে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। পরে দলের কার্যালয়েও তাঁরা ভাঙচুর চালান। বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকদের দাবি, অবিলম্বে দীপক হালদারের নাম প্রার্থী তালিকা থেকে প্রত্যাহার করতে হবে।
বিজেপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে ক্ষোভ পশ্চিম মেদিনীপুরেও। জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে খড়গপুরে পথে নামলেন বিজেপি কর্মীরা। পোড়ানো হল রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা ও খড়গপুর টাউন সভাপতি প্রেমচাঁদ ঝায়ের কুশপুতুল। বিজেপি কর্মীদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে যাঁরা দলের সঙ্গে যুক্ত, প্রার্থী তালিকায় তাঁরা উপেক্ষিত। বরং কংগ্রেস এবং সিপিএম থেকে আসা কর্মীদেরই প্রার্থী করা হয়েছে। জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনেরও অভিযোগ এনেছেন দলীয় কর্মীরা। প্রতিবাদ জানাতে খড়গপুর পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীরা।
তবে এ বিষয়ে কড়া অবস্থানই নিয়েছে দল৷ তবে যেভাবে বিক্ষোভের ঘটনা বাড়ছে, তাতে পাল্লা দিয়ে অস্বস্তিও বাড়ছে বিজেপি নেতৃত্বের …