নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কিন্তু তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন৷ আর এই নাম বিভ্রাটেই বিভ্রান্ত হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কমিশনে অভিযোগ জানিয়ে অস্বস্তিতে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী৷ মুখ পুড়েছে বিজেপি-রও৷
এ দিনই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মনোনয়ন পত্রে তথ্য গোপনের অভিযোগ তুলেছিলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী৷ সোমবার রিটার্নিং অফিসারের কাছে লেখা একটি বিস্ফোরক চিঠিতে শুভেন্দু দাবি করেন, নিজের হলফনামায় ৬ টি ফৌজদারি মামলার কথা গোপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যে ৬ টি মামলার কথা তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন, তার মধ্যে ৫ টি মামলা ২০১৮ সালে দায়ের হয়েছিল অসমে। মমতার বিরুদ্ধে বাকি একটি মামলা ২০০৮ সালে নিজাম প্যালেসে দায়ের করেছিল সিবিআই। এমনটাই দাবি করেন নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর মনোনয়ন বাতিল করা হোক।
সিবিআই সূত্রে জানা যায়, বিজেপি-র অভিযোগপত্রে যে মামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও সম্পর্কই নেই৷ কারণ ওই মামলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে যাঁর নাম রয়েছে, তিনি আসলে অন্য একজন৷ সিবিআই সূত্রে খবর, ২০০৮ সালে দুর্গাপুর- আসানসোল এলাকার বাসিন্দা এক কেন্দ্রীয় সরকারি এক কর্মীর বিরুদ্ধে আয় বহির্ভূত সম্পত্তির মামলার তদন্তে নামে সিবিআই৷ অভিযুক্ত ওই কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীর স্ত্রীর নামও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ওই মামলার চার্জশিটে অভিযুক্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীর স্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম যু্ক্ত করেছিল সিবিআই৷ কিন্তু তার সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কোনও সম্পর্কই নেই৷ নাম বিভ্রাটে বিভ্রান্ত হয়েই কোনওভাবে ওই মামলার কথা উল্লেখ করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন শুভেন্দু অধিকারী৷ আর তা নিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ হয় বিজেপি৷ তবে শুভেন্দু মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বাকি যে মামলাগুলির কথা বলেছেন, সেগুলি অসমে দায়ের হয়েছিল বলেই জানা গিয়েছে৷
অসমে যে মামলাগুলি দায়ের হয়েছিল তার সবকটিই এনআরসি কার্যকর হওয়ার সময়। সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এনআরসি বিরোধী একাধিক মন্তব্য করেছিলেন, এমনকি তৃণমূলের বেশ কয়েকজন প্রথম সারির নেতাও গিয়েছিলেন অসমে। সেই সময়ই এই মামলাগুলি দায়ের করেছিলেন বেশ কয়েকজন এনআরসি সমর্থকরা। তৃণমূল শিবিরের অবশ্য দাবি, এই মামলা সংক্রান্ত নথি কখনই হাতে এসে পৌঁছয়নি যে কারণে মামলার কথাও উল্লেখ করা হয়নি। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কথায়, “নেতাদের বিরুদ্ধে ওরকম অনেক মামলাই থাকে। সবকিছুর খবর কেউ রাখে না।”