মুকুল প্রশ্নে কার্যত মতবিরোধ বেঁধে গেল বিজেপির অন্দরে। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চান না মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে এখনই কোনও পদক্ষেপ করতে। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী প্রকাশ্যেই মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের হুমকি দিয়ে বসেছেন। আবার এই একই ইস্যুতে মুখে কুলুপ দিলীপ ঘোষ তথা বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের। কার্যত মুকুল ইস্যুতে যে বিজেপি এখন দিশেহারা সেটা এই তিন শিবিরের তিন ধরনের আচরণ দেখেই এটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। ফলে আগামী দিনে বিজেপি থেকে কেউ তৃণমূলে চলে এলে সেই দিশাহারা দশা যে আরও বাড়বে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
মুকুল রায়ের বিজেপি ত্যাগ ও তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের ঘটনায় দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, ‘কারা থাকবেন, কারা যাবেন, তা নিয়ে আমি চিন্তিত নই। আয়ারাম-গয়ারামদের নিয়ে বিজেপি চলে না। বিজেপি-র যে ঝড় হয়েছিল তাতে অনেক ধুলোবালি দেবতার মাথায় এসে পড়েছিল। এ বার সেগুলো নর্দমায় যাওয়ার সময় হয়েছে।’ কিন্তু তাঁর এই কথার মধ্যে মুকুলকে নিয়ে কোনও উদ্বেগ যেমন ধরা পড়েনি তেমনি বিষয়টিকে তিনি যে বেশি গুরুত্বও দিতে চান না সেটাও পরিষ্কার হয়েছিল। অথচ শুভেন্দু অধিকারী রীতিমত এখন উঠেপড়ে লেগেছেন মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ করার জন্য। সেটা স্পষ্ট হয়েছে তাঁর কথাতেই। তিনি জানিয়েছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভারতবর্ষের আইনের উর্ধ্বে নয়। পশ্চিমবঙ্গে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করে দেখানোর দায়িত্ব আমার। স্পিকার থাকলেও দলত্যাগবিরোধী আইন পশ্চিমবঙ্গে কার্যকর হয়নি। আমি বিরোধী দলনেতা দায়িত্ব নিয়ে বলছি, আমি পদ্ধতি দেখাবো। দু’মাস – তিন মাস লাগতে পারে, আমি দলত্যাগবিরোধী আইন পশ্চিমবঙ্গে কার্যকর করে দেখাবো। দলত্যাগবিরোধী আইন মেনেই দলবদল করতে হবে। আমি নিজেও সব ছেড়ে একজন সাধারণ ভোটার হিসাবে বিজেপিতে যোগদান করেছিলাম। আমি বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। একজন যদি সব কিছু ছেড়ে দিয়ে দল বা মত বদলান, তাতে কিছু বলার নেই। সেই সুযোগ ভারতীয় সংবিধানে রয়েছে। বিজেপি কোনও ব্যক্তি নির্ভর দল নয়। সাংগঠনিক ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে বিজেপি। কেউ চলে গেলে দলের কোনও ক্ষতি হবে না। কে যাবে না যাবে সেটা তার ব্যাপার। দলত্যাগ বিরোধী আইন মেনেই দলত্যাগ করতে হবে। এর বাইরে কোনও উপায় নেই।’