আতঙ্ক কাটিয়ে, কোভিডবিধি মেনে প্রায় ২০ মাস পর ফের বাংলায় সচল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। হেমন্তের আলতো শিশিরের ছোঁয়া মেখে মঙ্গলবার থেকে খুলল স্কুল, কলেজ। সকাল থেকে শহর কলকাতা থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সরগরম হয়ে উঠেছে পড়ুয়াদের উপস্থিতিতে।
অনেক হয়েছে বাড়ি বসে থেকে পড়াশোনা। এ বার বাড়ির বাইরে বেরিয়ে প্রকৃতির সান্নিধ্যে এসে পড়াশোনা করতে হবে। নইলে পড়ুয়াদের আরও অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। এমনই মনে করছেন পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাই মঙ্গলবার স্কুল-কলেজ পুনরায় খুলে যাওয়ায় খুশির হাওয়া রাজ্যের শিক্ষামহলে।
বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে যে দেড় বছর পর রাজ্যে স্কুল খুলল। যদিও কথাটা ঠিক নয়। করোনার প্রথম ঢেউ কমে যাওয়ার পর গত ১২ ফেব্রুয়ারি নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খুলে গিয়েছিল। টানা দু’ মাস স্কুল হয়েও ছিল ভালো ভাবেই। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউ ভয়াবহ ভাবে ছড়িয়ে পড়ায় ফের ১৯ এপ্রিল স্কুল বন্ধ হয়ে যায়।
তবে এবার স্কুলে প্রবেশ আর আগেরমতো নেই। রীতিমত সময় লাগছে তাতে। দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে, স্যানিটাইজ করে তবেই ক্লাসরুমে ঢোকার অনুমতি মিলছে। তবু দীর্ঘদিন পর প্রিয়বন্ধুদের কাছে পেয়ে আনন্দের সীমা নেই কিশোর-কিশোরীদের। আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস চালু হয়েছে। পরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ছোটদের ক্লাসও চালু হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু
করোনা বধে একাধিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থার মাধ্যমে কার্যত চক্রব্যুহ তৈরি করে পাকাপাকিভাবেই স্কুল, কলেজের তালা খুলে গেল। শুরু হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাসও। প্রায় ২০ মাস পর ছাত্রছাত্রীরা পা রেখেছে শিক্ষাঙ্গনের উঠোনে। আবার আগের মত মুখোমুখি শিক্ষক–পড়ুয়া। বন্ধুদের সঙ্গে এক বেঞ্চে বসে পঠনপাঠনের পাশাপাশি খুনসুটিও শুরু হবে।
তবে এবারের ক্লাসরুমের চেহারা খানিক ভিন্ন। এক বেঞ্চে প্রিয়বন্ধুদের গা-ঘেঁষাঘেঁষি করে বসা বারণ। কোভিডের (COVID-19) বিপদ যে এখনও কাটেনি। মহামারী সংক্রমণ চোখ রাঙাচ্ছে এখনও। তাই শারীরিক দূরত্ববিধি বজায় রাখা আবশ্যিক। এক বেঞ্চে ন্যূনতম ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রেখে বসতে হবে। আর এই এই দূরত্ববিধির হিসেব কষতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, বেঞ্চ পিছু ২ জন করে পড়ুয়া বসছে। ক্লাসে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। নাহলে স্কুলের গেট থেকেই বিদায় নিতে হবে।