অসম্ভব তাণ্ডবলীলার পর যেন অদ্ভূত নিঃস্তব্ধতা গ্রাস করেছে দিঘাকে। সমুদ্র এখনও ফুঁসছে, তবে তার জলোচ্ছ্বাস অনেকটাই কম। অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড় যশ কতটা ক্ষয়ক্ষতি করল তার চূড়ান্ত হিসেব এখনও স্পষ্ট নয়। তবে একটা বিষয় পরিষ্কার, এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত যদি কোনও জেলা হয়ে থাকে তা হল পূর্ব মেদিনীপুর। আর তারপরেই থাকবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। উপকূলবর্তী এই দুই জেলা রীতিমতো লণ্ডভণ্ড হয়ে হয়ে গিয়েছে যশের জেরে। সব মিলিয়ে ১ কোটির বেশি মানুষ প্রভাবিত হয়েছেন বলে গতকাল বিকালেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর দিঘা, স্তব্ধ হয়ে একবুক ধ্বসের চিহ্ন নিয়ে সে দাঁড়িয়ে আছে। আবার কবে সে আগের মতো সেজেগুজে উঠবে তা সে নিজেও জানে না।
এই প্রবল জলোচ্ছ্বাসে দিঘায় পরিকাঠামোগত ভাবে ভালোই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গার্ডওয়ালের অনেকটা অংশ ভেঙে গিয়েছে। বড়ো বড়ো বোল্ডার এসে পড়ায় সৈকত সরণি জায়গায় জায়গায় ভেঙে গিয়েছে। সরণির ধারেই অবস্থিত পার্কও ক্ষতিগ্রস্ত। রাস্তার ধারে চেয়ারের অনেকগুলোই ভেঙে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সমুদ্রের ধারের দোকানপাটও। সমুদ্রের জল ঢুকে ওল্ড দিঘার উপকূলবর্তী হোটেলগুলিরও প্রভূত ক্ষতি করেছে
‘ইয়াস’-এর তাণ্ডবের চিহ্ন মন্দারমণিতেও। সমুদ্র তীরবর্তী একাধিক হোটেলে এখন ধ্বংসের ছাপ। ভেঙেছে একতলা বিশিষ্ট একাধিক হোটেল। বড়ো হোটেলগুলির নীচতলাতেও ‘ইয়াস’-এর তাণ্ডবের চিহ্ন বর্তমান।
পরিদর্শন শেষে দিঘাতে এসে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন তিনি। আর মনে করা হচ্ছে সেই বৈঠক থেকেই তিনি দিঘার পুনর্গঠন নিয়ে বড় কোন কিছু ঘোষণা করতে পারেন। এমনকি ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের দিকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারেন। তবেমাত্র কয়েক বছর আগে তৈরি মেরিন ড্রাইভ কীভাবে এত ক্ষতিগ্রস্ত হল, রিভিউ মিটিংয়ে সেই প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেচ দপ্তরের কাজেও ক্ষোভপ্রকাশ করলেন তিনি। দিলেন তদন্তের নির্দেশ।