বছর দুয়েক আগে সাব-ইনস্পেক্টর পরিচয় দিয়ে তোলাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল সে। এ বার আইপিএস অফিসার পরিচয়ে এক তরুণীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিন লক্ষ টাকা হাতানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হল দত্তপুকুরের বাসিন্দা রাজু দেবনাথকে। রবিবার রাতে দত্তপুকুর থেকেই তাকে ধরে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ। সোমবার রাজুকে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে সাত দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
সেই কসবা ভ্যাকসিন কাণ্ড থেকে শুরু। সেই ভুয়ো আইএএস অফিসার কসবার দেবাঞ্জন দেব দিয়ে শুরু হয়। তার পর রাজ্যে যেন ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হওয়ার পরিস্থিতি। বরানগরের সনাতন রায় চৌধুরী, বেলঘরিয়ার রাজর্ষি ভট্টাচার্য – ভুয়ো আইএএস, ভুয়ো সিবিআই কৌঁসুলী, ভুয়ো আইপিএস, ভুয়ো বিচারক, ভুয়ো সেনা- ‘ঠগ’দের এই তালিকায় এখন নবতম সংযোজন হচ্ছে প্রায় রোজদিন। এবার তাতে নয়া সংযোজন হল দত্তপুকুরের রাজু দেবনাথ।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত রবিবার বেলঘরিয়ার বাসিন্দা, সদ্য বি কম পাশ ওই তরুণী থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করেন। এক আইপিএস অফিসার তাঁকে প্রতারিত করেছেন শুনে হকচকিয়ে যান পুলিশকর্মীরাও। কিন্তু খোঁজ নিয়ে তাঁরা দেখেন, রাজু দেবনাথ নামে কোনও আইপিএস এ রাজ্যে নেই। এর পরে তদন্তকারীরা দত্তপুকুরের হাটখোলার কালীবাড়ি এলাকায় রাজুর বাড়িতে হানা দেন। সেখানেই গ্রেফতার করা হয় ওই যুবককে। ব্যারাকপুরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) অজয় প্রসাদ বলেন, ”ধৃতের বাড়ি থেকে একটি পুলিশের উর্দি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তাকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে হাতানো টাকা উদ্ধার করা হবে।”
সূত্রের খবর, রাজুর বাড়ি থেকে খাকি উর্দির পাশাপাশি টুপি ও বেল্টও মিলেছে। উর্দির কাঁধে লাগানো
ব্যাজে আইপিএস লেখার পাশাপাশি রয়েছে অশোক স্তম্ভ। যা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার অফিসারেরা ব্যবহার করেন। অভিযোগকারী তরুণী দাবি করেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে বন্ধুত্বের আবেদন পাঠিয়েছিল ওই ভুয়ো আইপিএস অফিসার। কিন্তু তখন তিনি ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি যে, ওই যুবক আসলে জালিয়াত। কয়েক দিন কথাবার্তা চলার পরে দু’জনের দেখা হয়। তৈরি হয় ঘনিষ্ঠতা। ওই ভুয়ো অফিসার বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয় বলেও অভিযোগ তরুণীর। এর কিছু দিন পর থেকেই বিভিন্ন অছিলায় টাকা নিতে শুরু করে রাজু। আরও টাকা চাইতেই বেঁকে বসেন ওই তরুণী।
অভিযোগ, এর পরেই দু’জনেরঘনিষ্ঠ কিছু ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় ওই যুবক। তখনই পুলিশের কাছে আসেন ওই তরুণী।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ২০১৯ সালে সাব-ইনস্পেক্টর পরিচয় দিয়ে তোলাবাজির অভিযোগে তাহেরপুরে গ্রেফতার হয়েছিল রাজু।