তৃণমূলের সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার অভিযোগ নতুন নয়। এবার সেই একই অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। দেশে লোকসভা ভোট কবে ও ক’দফায় হবে তা ঘোষণা করে দিলেন বীরভূমের এক তৃণমূল নেতা। বিজেপি নেতা কী করে লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট আগাম জানলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।
শনিবার সিউড়িতে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে এক সাংগঠনিক বৈঠক চলছিল। বৈঠকে হাজির ছিলেন জেলার ছোট – বড় বিজেপি নেতারা। সেই বৈঠকেই লোকসভা ভোটে দলের বীরভূম জেলার ইনচার্জ সুজিত দাসকে বলতে শোনা যায়, ‘আগামী ১০ এপ্রিল সম্ভবত নির্বাচন শুরু হচ্ছে। ১০ এপ্রিল থেকে ১৫ মে, এই সময়সীমার মধ্যে ভোট ৮ পর্বে আমাদের লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। দু’একদিন তারিখের হেরফের হতে পারে। মনে রাখবেন, আমাদের রাজ্যেও ৮টি পর্বে লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে’।
বিজেপি নেতার ভোট ঘোষণাকে কটাক্ষ করে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘বিজেপি কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলির রাজনীতিকরণ করে ফেলেছে। তাই কোন তৃণমূল নেতার বাড়ি সিবিআই হানা হবে তা আগে থেকে বিজেপি নেতারা বলে দেন। এখন তো নির্বাচনের নির্ঘণ্টও বলে দিচ্ছেন। এরা প্রতিষ্ঠানগুলিকে হাস্যকর করে তুলেছে।’
গত মার্চে এক রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, জাতীয় নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের কমিটিতে প্রধান মন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা ছাড়াও থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। গত অগাস্টে এক বিল এনে সুপ্রিম কোর্টের সেই রায়কে খারিজ করে মোদী সরকার। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির জায়গায় কমিটিতে স্থান দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রী মনোনীত একজন মন্ত্রীকে। এর ফলে ৩ সদস্যের কমিটিতে সরকারপক্ষ সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে পড়ে। মোদী সরকারের এই পদক্ষেপকে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ওপর আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। এতে গণতন্ত্র দুর্বল হবে বলে মত রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের।
শুধু কেন্দ্রে নয়, রাজ্যেও একই রকম একতরফাভাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে। বর্তমান রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীবা সিনহার বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী সঠিক ভাবে ব্যবহার না করায় আদালত অবমাননার রুল পর্যন্ত জারি হয়েছে।